ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: যে বয়সে মাঠে ঘাটে খেলে বেড়ানোর কথা – সেই বয়সেই সুমন কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের জোয়াল। সংসারের আর্থিক অনটন ঘোচাতে গ্রামের পর গ্রাম সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র সুমন ঘোষ সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে চলেছে মিষ্টি। বর্ধমানের নবস্থা অঞ্চলের খাঁড়গ্রাম ঘোষপাড়ার বাসিন্দা বছর ১৩-র সুমন ঘোষ। সে স্থানীয় খাঁড়গ্রাম জুনিয়র হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র।
বিজ্ঞাপন
প্রায় বছর দুয়েক তার বাবার রক্তে অতিরিক্ত সুগার ধরা পড়েছে। ফলে কর্মক্ষমতা হারাতে বসেন তিনি। এমতবস্থায় বাবা, মা, ছোট ২ বছরের বোনকে নিয়ে সংসারের জোয়াল টানতে এই ছোট্ট বয়সেই রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েছে সুমন। যেমন করেই হোক সংসারের আর্থিক অনটন ঘোচাতে বদ্ধপরিকর সে। চলতি সময়ে সে বিক্রি করে চলেছে নলেন গুড়ের রসগোল্লা। সাইকেলে রসগোল্লার পাত্র বেঁধে এ – গ্রাম থেকে ও-গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে চলেছে সে রসগোল্লা।
সুমন জানিয়েছেন, তার বাবা অসুস্থ। ব্লাড সুগারের জন্য বাবার চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। তারপরই সে বেড়িয়ে পড়ে। এই যে রসগোল্লা সেটা তার বাবাই তৈরী করে দেয়। সে বিক্রি করে। খোঁজ রাখে, কোথায় কোনো অনুষ্ঠান, খেলাধূলা, মিটিং, মিছিল হচ্ছে কিনা। সটাং চলে যায় সেখানে। বিক্রিও হয় ভালই। বিক্রি শেষে ঘরে ফেরা। পড়াশোনা করা। আছে একজন প্রাইভেট টিউটর। বাকিটা বাবার কাছেই পড়া। না, এই কাজ করতে তার কোনো অসুবিধা হয় না। বরং মন দিয়েই সে এই কাজ করে চলেছে। দৃশ্যত, এই বয়সে যখন তারই বয়সী ছেলেমেয়েরা মাঠে ঘাটে খেলে বেড়ায় ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে – তখন ফের সমাজের বুকে সুমন এক কঠিন বাস্তবের দৃষ্টান্ত রেখে দিচ্ছে প্রতিদিন।