ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,আউশগ্রাম: সকাল থেকেই সাইকেলে চড়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শাকসবজি ফেরি করেন পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেরেণ্ডা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বনাথ সিং। তিনি পেশায় জনমজুর। তবু স্ত্রী দুই পুত্র সন্তান নিয়ে সংসারের হাল টানতে শাকসবজিও ফেরি করেন। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ভোটে জিতে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে এখনও তিনি তার পেশা ছাড়েননি।
বিজ্ঞাপন
আউশগ্রাম ১ ব্লকের মাজেরগ্রামে বিশ্বনাথ সিংয়ের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, দুই পুত্র। স্ত্রী মানবী সিংও জনমজুরি করেন। বড় ছেলে রাণা প্রতিবন্ধী। কিছুদূর পড়াশোনা করে এখন বাড়িতেই থাকে। ছোট ছেলে সায়ন নবম শ্রেণীর ছাত্র। ছাপোষা সংসার। একটি সাদামাটা বাড়িতে বসবাস করেন বিশ্বনাথবাবুরা। মাটির দেওয়াল, আ্যসবেসটসের ছাউনি, এক কুঠুরি ঘর। তার মধ্যেই চারজনকে থাকতে হয়। বিশ্বনাথ সিং প্রতিদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। রোজ ভোর সাড়ে তিনটের মধ্যেই ঘুম থেকে উঠে পড়েন। তারপর সাইকেল চালিয়ে চলে আসেন গুসকরা শহরে। পাইকারি দোকানে শাকসবজি কেনেন। এরপর ঘুরে ঘুরে গুসকরা শহর ও আশপাশের গ্রামে বিক্রি করেন। বিক্রি হয়ে গেলে বাড়ি ফিরে অফিসে রওনা দেন।
বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী মানবী সিং বলেন,” আগে আমার স্বামী শাকসবজি বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পর মাঠে কাজে যেতেন। এখন উপপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর সবদিন কাজে যেতে পারেন না। তবে আমাকে এখনও জনমজুরের কাজ করতে হয়।” মাজেরগ্রাম থেকে পঞ্চায়েত অফিসের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। কখনও সুযোগ পেলে বিশ্বনাথবাবু সহকর্মীদের বাইকে চড়ে যান। তা নাহলে বাসে যাতায়াত করেন। আবার সাইকেলেও মাঝেমধ্যে যেতে হয়।
বেরেণ্ডা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের এই জীবনসংগ্রামের প্রশংসা করে তৃণমূল কংগ্রেসের আউশগ্রাম ১ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি প্রশান্ত গোস্বামী বলেন,” বিশ্বনাথ সিংয়ের মতো ব্যক্তি আমাদের দলের সম্পদ। একজন খেটেখাওয়া মানুষ পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আবার সারা দিনরাত সততার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন। এটা সকলের কাছে শিক্ষনীয়।”