ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসী: ১৭জুন থেকে সরকারি নির্দেশে পূর্ব বর্ধমানের সমস্ত নদ নদী থেকে বালি তোলা এবং মজুদ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরেও
বিজ্ঞাপন
সরকারী নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই গলসির গোহগ্রাম এলাকায় দামদর নদ থেকে বালি চুরি করে মজুত করছেন কিছু বালি মাফিয়া। গোহগ্রাম আর পুরাতন গ্রামের মাঝে দামোদর নদের বুক থেকে এলাকার দু থেকে তিনটি জায়গায় দেদারে চলছে এই কাজ। যা নিয়ে নদীর আশেপাশের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রীতিমত নদী বক্ষে মেশিন নামিয়ে চলছে বালি উত্তোলনের কাজ। প্রথমে সেই বালি মজুদ করা হচ্ছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায়। পরে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে লরি লরি বালি পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাজারে বালির চাহিদা থাকায় রাতারাতি দামদরের নদের পাড়ে মেশিন ও নেট লাগিয়ে কয়েকজন বালি মাফিয়া এই বালি চুরি করে মজুত করছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় কিছু বাসিন্দাদের কাছে জানা গেছে, গলসীর গোহগ্রামের কাছে দামোদর নদের বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের থানার শালখাড়া মৌজায় চলছে এই অবৈধ বালির কারবার। তারা বলেন, বাঁকুড়া মৌজা থেকে ওই বালি তুলে ডাম্পার ভর্তি করে নদীর বাঁধের ধারে পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি এলাকায় দফায় দফায় মজুত করেছে দুই তিনজন অসাধু ব্যবসায়ী।
অভিযোগ ভূমি দপ্তরের অভিযানের সময় দু একটি মজুত বালির জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছে এই অসাধু বালি কারবারিরা। সেইমত মাপযোগ করে জরিমানা ধার্য করে দিচ্ছে ভুমিদপ্তর। বাকি বিশাল পরিমান মজুদ বালির কোন হিসেবেই প্রসাশনের কাছে থাকছে না। এর ফলে প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে মজুত বালি বৈধ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এই কারবারিরা। আর সেই চালান দিয়েই বালি লরিতে করে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন। ফলে আইনি ফাঁকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জেলা প্রশাসন তথা সরকার। মাঝখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা মুনাফা কামিয়ে নিচ্ছে এই বালি মাফিয়ারা। অভিযোগ এই কারবারে কিছু বৈধ ঘাট মালিকদেরও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদত রয়েছে। আর এরফলেই দিনের পর দিন এলাকায় অবৈধ বালি ঘাটের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে রাস্তা তৈরী করে বালি উত্তোলন করছে ওই সকল অসাধু ব্যবসায়ীরা। যার জেরে এলাকার রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সমস্যায় পরছেন এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিক ঋদ্ধি ব্যানার্জি এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, অবিলম্বে গোহগ্রাম এলাকার দামোদর নদের এই সমস্ত জায়গায় অভিযান চালানো হবে। কোনোভাবেই নদী থেকে বালি তোলা বা মজুদ করা বরদাস্ত করা হবে না। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন দামোদর নদ থেকে বর্ষাকালে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশিকা জারি করছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। যা পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। ভারত সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের বালি মাইনিং ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইনস, ২০১৬ অনুসারে এবং ইসির শর্ত অনুযায়ী বর্ষাকালে নদী থেকে বালি উত্তোলন সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। তাছাড়া, সমস্ত বৈধ বালি ঘাট মালিকদের নদী থেকে অস্থায়ী কাঠের সেতু সরিয়ে নেওয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছে দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। তারপরও দামদর থেকে বালি চুরি করে মজুত করা হচ্ছে বলে বলে জানা গেছে।