ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: আমফান এর প্রভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে বুধবার বিক্ষিপ্তভাবে বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টানা বৃষ্টির জন্য কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জায়গায় জায়গায় প্রচুর গাছ উপরে পড়েছে মাটি থেকে।
জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিক জানিয়েছেন আমফান এর প্রভাব এই জেলাতেও পড়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কালনা ২ ব্লকে ১৬টি কাঁচা বাড়ির পাঁচিল ভেঙে পড়েছে। ঝাউডাঙ্গা পঞ্চায়েতে একটি কাঁচা বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। গুসকরা পৌর এলাকায় ৮টি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর পাওয়া গেছে। বর্ধমান ১ব্লকের বাঘার গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনতাল গ্রামে তিনটি বাড়ির চাল উড়ে গেছে। আউশগ্রাম ১ ব্লকের ১০টি বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বর্ধমান পুরসভার ১১নম্বর ওয়ার্ডে ৪টি বাড়ির চাল উড়ে গেছে। দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, রাতভর বৃষ্টি চলতে থাকলে জেলায় আরও কাঁচা বাড়ির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত জেলায় কোনো হতাহতের খবর নেই।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুধু বর্ধমান পৌর এলাকায় ৬৫ থেকে ৭০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে কিম্বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির তলা দিয়ে যাওয়া কেবল লাইনেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আর এর ফলে চরম বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে শহর জুড়ে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন জায়গাতেও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকা। যদিও বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক সহ কর্মীরা এই দুর্যোগের মধ্যেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে।
এদিন মন্তেশ্বর বাজার এলাকায় একটি অশ্বত্থ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে দুই মহিলা সহ এক ব্যক্তি জখম হয়েছেন। তাঁদের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে এদিন সকালে পূর্বস্থলীর কালেখাতলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফালেয়া দক্ষিণপাড়া এলাকার এক মহিলার বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে আমফান এর কোনো সম্পর্ক নেই বলেই বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও বর্ধমান শহরের ২৬নম্বর ওয়ার্ডের গোদা খন্দকর পাড়ায় ঝড়ের দাপটে বিদ্যুতের পোল ভেঙে পড়েছে। যদিও এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর নেই। পাশাপাশি, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে। রাস্তার পাশে অস্থায়ী ছাউনি দেওয়া বেশ কিছু দোকানের ক্ষতি হয়েছে বলে খবর এসেছে।