ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: এবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মোকাবিলায় জোরদার প্রস্তুতি গ্রহণ করলো বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কতৃপক্ষ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষা সুহৃতা পাল জানিয়েছেন,স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মোকাবিলায় তৈরী করা হয়েছে একটি বিশেষ ওয়ার্ড।
এই মুহূর্তে ওয়ার্ডে রয়েছে ছ’টি বেড। প্রতিটি বেডের মধ্যে ১ মিটার করে দূরত্ব রাখা হয়েছে।মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধীনে এই বিশেষ ওয়ার্ড তৈরী করা হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক দীনবন্ধু নাগা কে এই করোনা ভাইরাসের জন্য তৈরী হওয়া ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্বাস্থ্য দপ্তর পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেশ কিছু চিকিৎসক, নার্স, ও গ্রুপ ডি স্টাফেদের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর। ৪ তারিখে স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষ থেকে জারি করা এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিলো হাসপাতাল গুলি কে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন মেডিক্যাল বুলেটিনের দিকেও নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এই নির্দেশিকার পরেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
যদিও হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীই ভর্তি হয়নি এই ওয়ার্ডে। তবে মেডিক্যাল কলেজের বর্হিবিভাগের মেডিসিন, স্ত্রীরোগ, শিশু বিভাগ সহ অনান্য সমস্ত বিভাগেই নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগীদের প্রতি কিভাবে নজর দিতে হবে সে বিষয়টি জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষিত চিকিৎসকদের।
দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎক দীনবন্ধু নাগা জানিয়েছেন,‘আমাদের কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস নিয়ে। সেখানে আমাদের বলা হয়েছে আমরা আক্রান্ত রোগী হিসেবে কাকে সাসপেক্ট করব। কিভাবে চিহ্নিত করব। আইসোলেশন ওয়ার্ডের মতন আমাদের হাসপাতালে ৬ বেডের একটি বিশেষ ইউনিটও খোলা হয়েছে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায়। সেখানে যারা চিকিৎসার দায়িত্বে থাকেবেন সেই চিকিৎসক, নার্স ও গ্রুপডি স্টাফেদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
যেহেতু ড্রপলেট থেকে সংক্রমন ছড়াতে পাড়ে তাই সবাইকে চোখ ঢাকার জন্য বিশেষ চশমা, থ্রি লেয়ার মাস্ক, নার্সদের ক্ষেত্রে চুলও ঢেকে রাখার নির্দেশ আছে। এন ৯৫ ও থ্রি লেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা হবে। সমস্ত দিক থেকেই আমরা প্রস্তুত আছি। সন্দেহ হলে সেই রোগীর রক্তের পরীক্ষা ও থোর্টসোআপ করাতে হবে। সেটি সংগ্রহের পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আমরা পাঠাবো। এটা নিয়ম করেই করতে হবে। নুন্যতম সন্দেহ হলেই এটা আমাদের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনভাবে পজেটিভ রোগী ধরা না পড়ে প্রথমেই এমনটা না হয়।’ ২৪ ঘন্টার জন্যই এই ওয়ার্ডের জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের মজুত রাখা হয়েছে।
দীনবন্ধু নাগা আরও বলেন, ‘প্রতি শিফটে তিনজন করে চিকিৎসক, ২ জন করে নার্স ও ১ জন করে গ্রুপ ডি স্টাফ থাকবেন এই ওয়ার্ডে। মেডিসিন, গাইনি, কার্ডিওলজি ও শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবেন। আমাদের ইউনিট রেডি। আজই কেউ আক্রান্ত হলে আমরা তৈরী। তবে কেউ যাতে ভর্তি না হন সেটাই আমাদের কাম্য।’
ছবি – ইন্টারনেট