তাঁরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদার জুলুমে যখন কমবেশী বিভিন্ন ব্যবসাদার থেকে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট। ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না, সেই খাগড়াগড় দৃশ্যতই গোটা রাজ্যকে পথ দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, চলতি সময়ে জেলায় জেলায়, পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠেছে সিণ্ডিকেট রাজ। সিণ্ডিকেটের মাথাদের কাছে টাকা না দিলে বাড়ি কেনা, বাড়ি বিক্রি, বাড়ি তৈরী, এমনকি বাড়ি তৈরির জন্য ইট,বালি,সিমেন্ট, পাথর – কোনো কিছুই প্রায় কেনা অসম্ভব – সেই উৎপাতেরও দেখা নেই খাগড়াগড়ে – দাবী করেছেন এলাকার বাসিন্দারাই।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বর্ধমানের এই খাগড়গড় গোটা বিশ্বের কাছে আতঙ্ক তৈরি করেছিল। এই খাগড়াগড়েই ডেরা গেড়েছিল জেএমবি জঙ্গীরা। বিস্ফোরণে প্রাণ গেছিল কয়েকজন জঙ্গীরও। সেই কালো দিনের ইতিহাস ভুলে খাগড়াগড় এখন পুরোপুরি চেনা ছন্দে আর পাঁচটা এলাকার মতই। আর সেই খাগড়াগড়ে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উদ্যোগে এই অভিনব পন্থাকে ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। এলাকার যুব তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইনসান জানিয়েছেন, এলাকার সমস্ত ধরণের উন্নয়নের স্বার্থেই তাঁরা এই অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন। প্রতিদিনই এলাকার মানুষরা এখানে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এই বাক্সে তাঁদের দান দিয়ে যাচ্ছেন। কে কত টাকা দিচ্ছেন তা বিষয় নয়। বিষয় হল সমবেত প্রচেষ্টা।
তিনি জানিয়েছেন, এই টাকা দিয়েই এলাকার গরীব দুঃস্থ মেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন তাঁরা। কেউ হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেলে, টাকার অভাবে যেন তিনি অসুবিধায় না পড়েন – তার জন্যই এই বাক্স হাজির। এখান থেকেই তাঁরা টাকা দিয়ে সাহায্য করছেন। তিনি জানিয়েছেন, চলতি শীতের প্রকোপে বেশ কিছু মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন বলে তাঁরা জেনেছেন। তাঁদের জন্য এই বাক্সের টাকা থেকেই কম্বল কিনে তাঁদের দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শুধু এটাই নয়, হঠাৎ করেই কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করার ক্ষেত্রেও এই বাক্স তাঁদের সহায়। মহম্মদ ইনসান জানিয়েছেন, যে কোনো কাজ করতে গেলেই টাকার দরকার হয়। তাই তাঁরা ঠিক করেছেন খাগড়গড় এলাকার কোনো মানুষের কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া যাবে না। পরিবর্তে এই বাক্স। যাঁদের যা ইচ্ছা তাঁরা তাই দিচ্ছেন। আর তাঁরাও সেই টাকার যথাযথ সদ্ব্যবহার করছেন। এরফলে একদিকে যেমন দলের ভাবমূর্তি ঠিক থাকছে, অন্যদিকে এই ব্যবস্থায় খুশি এলাকার সাধারণ ভোটারাও।
*ছবি প্রতীকী (সংগৃহিত ইন্টারনেট)