১৭জুন থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ পূর্ব বর্ধমানে
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: দামোদর নদ থেকে বর্ষাকালে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশিকা জারি করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। ১৭জুন থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশই কার্যকর থাকবে। পাশাপাশি দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আগেই সমস্ত বৈধ বালি ঘাট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন নদী থেকে বালি বহনের জন্য তৈরি করা অস্থায়ী কাঠের সেতু গুলোকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। নির্দেশে বলা হয়েছে, এই সমস্ত নির্দেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমনকি নির্দেশ না মানা হলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ভারত সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের বালি মাইনিং ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইনস, ২০১৬ অনুসারে এবং ইসির শর্ত অনুযায়ী বর্ষাকালে নদী থেকে বালি উত্তোলন সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। সাধারণত এই নির্দেশ জুন মাসের ১৫তারিখ থেকে কার্যকর হয়ে থাকে। তবে বর্ষার গতি প্রকৃতি, নদীর জলস্তর ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে প্রতি বছর জেলা প্রশাসন নদী থেকে বালি উত্তোলন সংক্রান্ত বন্ধের অথবা খোলা রাখার নির্দেশ কার্যকর করে। যেমন গত বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে মার্চ মাস থেকে টানা লকডাউনের কারণে জেলার সমস্ত নদ নদী থেকে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধ ছিল পরিবহন ব্যবস্থাও।
জুন মাসে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে ফের চালু হয় বালি উত্তোলন। বালি ব্যবসায় মন্দা এবং সরকারি রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির কারণে এবং বর্ষা কিছুটা দেরিতে আসার জন্য গত বছর পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ১০জুলাই পর্যন্ত এই সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এবছর ইতিমধ্যেই বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় এবং ডিভিসি জল ছাড়তে শুরু করার কারণে ১৭জুন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকেই সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হল নদী থেকে বালি উত্তোলন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
প্রশাসন সূত্রে এও জানা গেছে, বর্ষাকালীন বালি উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাবে বলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বালি মজুদ করার বিষয়ে বৈধ লাইসেন্স প্রাপ্ত বালি ঘাট মালিকদের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবারও করোনা পরিস্থিতির জন্য আংশিক লকডাউন জারি রয়েছে। পরিবহনও বন্ধ। এরই মাঝে চোরাগোপ্তা বালি পাচারের কারণে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে পুলিশ একাধিক বালির গাড়ি আটক করে। গ্রেফতারও হয় একাধিক ব্যক্তি। কোনো বৈধ চালান ছাড়াই এই সমস্ত গাড়িগুলো বালি নিয়ে যাচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। আর এরই মাঝে গত বছরের মতো এবছর আর বালি উত্তোলনের সময়সীমা বাড়তি না পাওয়ায় বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক রীতিমত সমস্যায় পড়লো বলেই জানিয়েছেন বালিঘাট মালিকদের একাংশ।