২২মের পর নবান্ন ছেড়ে চলে যেতে হবে তৃণমূল সরকারকে – সূর্যকান্ত

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: আগামী ২২ মে-র মধ্যে তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রীকে নবান্ন ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ-রা এখন বাংলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রীতিমত পরিকল্পনা করেই সিপিএমের বিগ্রেডের দিন তাঁরা বাংলায় থাকবেন। তাঁরা দেখবেন ঐতিহাসিক বিগ্রেড সমাবেশ। ওইদিন কলকাতার সমস্ত রাজপথ স্তব্ধ হয়ে যাবে। গতবছর বিগ্রেড সমাবেশের পরই দিদিমণি রাস্তায় বসে পড়েছিলেন পুলিশ কমিশনারকে রক্ষা করতে। এবারেও হয়তো ভাইপোর বাড়িতে রেইড হবে। আবার হয়ত তিনি রাস্তায় বসে পড়বেন। আসলে খেলা চলছে। সোমবার দীর্ঘ প্রায় ৮বছর পর বর্ধমানের দেওয়ানদিঘী এলাকায় সিপিএমের প্রকাশ্য সভায় এভাবেই রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গেলেন সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। 

২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী দেওয়ানদিঘীতে খুন হয়েছিলেন সিপিএমের বিধায়ক প্রদীপ তা এবং সিপিএম নেতা কমল গায়েন। এদিন এই দুই শহীদের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে আসেন সূর্যকান্ত মিশ্র। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পর দেওয়ানদিঘী এলাকায় যা এক সময় সিপিএমের দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল সেই জায়গায় সভা করল সিপিএম। যা আগামীদিনে বিধানসভা নির্বাচনে অতিরিক্ত অক্সিজেন যোগালো সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিনের এই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক, সিপিএমের কৃষকসভার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমল হালদার, শহীদ প্রদীপ তা-এর মেয়ে ও স্ত্রী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে সূর্যকান্তবাবু বলেন, মানুষের ওপর আক্রমণ হচ্ছে – সেসব ধামাচাপা দেবার জন্য এই সব করা হচ্ছে। নজর ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। শ্রমিক, বেকার, সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন – যাঁদের স্মরণ করছি আমরা এখন – সেই সব চাপা দেবার চেষ্টা চলছে। মানুষের জীবন যন্ত্রণার ঘটনা তুলে ধরা যাতে না যায় – সেজন্য চেষ্টা চলছে। কিন্তু শহীদ কমরেডদের অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই হবে। কিন্তু রাজ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিজেপি-তৃণমূল যাই করুক এবার লড়াই ত্রিমুখী হবেই। বিজেপি তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বামপন্থীরা লড়াইয়ে আছে। সেই লড়াইয়ের মাঠকে আরও বড় করার চেষ্টা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেভাবে কৃষকদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে, শ্রমিকদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে স্বাধীনতার পর আগে কখনও হয়নি। করোনার জন্য দেশের ১৫ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। মার্চ মাসের শেষে তা ২০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। এই সমস্যার কোনো সমাধান হল না আজও। ১০০ কোটি মানুষের দেশে ভয়ংকর সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে। সূর্যকান্তবাবু এদিন বলেন, কতজনের আয় বেডে়ছে? বিজেপি তৃণমূলের কারও কারও আয় বেড়েছে কিন্তু সর্বসাধারণের আয়ে ধ্বস নেমেছে। মানুষের কাছে গিয়ে এসবই বিনম্রভাবে বিনীতভাবে বোঝাতে হবে।
মানুষের মধ‌্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। গান্ধীজীকে ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা করছে আজকের বিজেপি, আর এস এস। মোরগ লড়াইয়ের মত মানুষে মানুষে লড়াই করানো হচ্ছে। জাতপাতের লড়াই বাধানো হচ্ছে। পাহাড়ে যারা আগুন জ্বালালো, তাদের ওপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে। গরীব ৭১ শতাংশ মানুষকে বিভাজিত করা হচ্ছে। বিজেপি ভয়ংকর শক্তি। দেশে গুণ্ডাগিরি করছে। কয়লা, গরু, চিটফাণ্ড নিয়ে এসব তদন্ত করছে। কিন্তু রাফাল কেলেংকারীর মত বড় বড় ঘটনার তদন্ত কই। ওরা ডাকাত।