২৭টি ডিম সমেত মা গোখরো উদ্ধার, গত সাতদিনে বর্ধমান থেকে উদ্ধার ১০টি বিষধর

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: সরকারিভাবে বর্ষা শুরু হতে এখনও মাস খানেক দেরী। এরই মধ্যে কালবৈশাখীর দাপটে বেশ কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে বর্ধমানে। আর বৃষ্টি শুরু হতেই ফের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে বনদপ্তরের উদ্ধারকারী দলের কর্মীদের। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত সাতদিনেই বর্ধমান শহর ও লাগোয়া এলাকা থেকে উদ্ধারকারী দলের কর্মীরা ১০টি বিষধর সাপ উদ্ধার করেছে। যার মধ্যে ৬টি গোখরো, ৪টি চন্দ্রবোড়া। এরই মধ্যে দুটি ঘটনায় হাড়হিম হয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছিল উদ্ধারকারী দলের কর্মীদেরই। 

কয়েকদিন আগেই বর্ধমান শহরের সরাইটিকর ভাসাপারা এলাকার একটি বাড়ি থেকে পাঁচটি সদ্য দেওয়া ডিম সমেত একটি প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা মা গোখরো কে উদ্ধার করে রমনা বাগান ফরেস্টে নিয়ে আসে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। সদস্যদের রীতিমত হিমশিম খেতে হয় মা কে ডিম থেকে সরিয়ে উদ্ধার করতে। পরবর্তীকালে ফরেস্টে আরো ১১টি ডিম দেয় ওই সাপ টি। বর্তমানে বনদপ্তরের রীতিমত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যায় ডিম ও মা সাপকে রাখা হয়েছে। আর এরই মধ্যে মঙ্গলবার রায়না থানার বাঁকুড়া মোড় এলাকার একটি রাইস মিলের ভিতর থেকে ফের ২৭টি ডিম সহ প্রায় চার ফুট লম্বা একটি মা গোখরো কে উদ্ধার করল উদ্ধারকারী কর্মীরা। প্রায় আধ ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় এই বিষধর ও ডিমগুলোকে নিয়ে আসা হয়েছে রমনাবাগান মিনি জু তে।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ডিম সমেত মা কে প্রথমে কয়েকদিন একসঙ্গে রাখলেও পরে মা কে বিভিন্ন জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে তাদেরকেও ছেড়ে দিয়ে আসা হয় জেলার বিভিন্ন জঙ্গল এলাকায়। আধিকারিকের কথায়, প্রথমে ডিম গুলিকে দুটি পৃথক বাক্সে রাখা হয়। ডিম ফোটানোর জন্য বিশেষ পদ্ধতি নেওয়া হয়। যাতে বাক্সের মধ্যে তাপমাত্রা ঠিক থাকে সেই মত ব্যবস্থা করা হয়। এইভাবে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখলে ২৬ থেকে ২৮দিন পর বাচ্চা বেরিয়ে আসবে। সেগুলিকেও আলাদাভাবে যত্ন নিতে হবে। প্রথমদিকে পিঁপড়ে খাওয়ানো হবে। পরে মাংস দেওয়া হবে। তারপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
বন কর্মীদের কথায়, ডিম দেওয়ার পরে অনেকটাই শান্ত হয়ে যায় মা সাপ। তবে ডিম গুলির থেকে মা সাপ কে আলাদা করতে বেশ বেগ পেতে হয়। কারণ সেই সময় সে ক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে। ফোঁসফোঁস আওয়াজ করে। ডিমগুলি ছেড়ে যেতে চায় না। ঝুঁকি নিয়ে তাকে সরানো হয়। খুব সাবধানতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। এদিকে ফের সাপের উপদ্রব বাড়তে শুরু করায় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকার মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করতে উদ্যোগী হচ্ছে বনদপ্তর বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বিনাধিকারিক নিশা গোস্বামী।