৩০ বছরেও রাস্তা সংস্কার হয়নি, জেসিবি দিয়ে রাস্তা কেটে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের, উত্তেজনা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,খণ্ডঘোষ: গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল প্রায় ৩০বছরেও কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার কোনো সংস্কার করেনি বাম, ডান কোনো সরকার। একাধিকবার এই দাবিতেই ভোট বয়কটের হুমকি থেকে বিধায়কের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা। জেলা প্রশাসনের কাছেও বারবার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা রাস্তা সংস্কারের। কিন্তু হয়নি। শেষমেশ বৃহস্পতিবার রাতে জেসিবি দিয়ে রীতিমত কেটে দেওয়া হল গুরুত্বপূর্ন রাস্তার অনেকটাই অংশ। আর এরফলে এই রাস্তা দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারলেও কার্যত যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে বালি খাদানে যাতায়াতকারী সমস্ত লরি,ট্রাক। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ব্লকের কামালপুর এলাকায়। 

বিজ্ঞাপন

 গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাস্তাটির অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। একসময় রাস্তাটি পিচের তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, এখন রাস্তায় পিচের কোনও অবশিষ্টই নেই। অভিযোগ, রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন দামোদর নদের বালি খাদানের কয়েকশো লরি যাতায়াত করে। ফলে রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এই রাস্তা। গ্রামবাসীরা যাতায়াত করার সময় প্রতি মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন। এলাকার পড়ুয়ারা এই রাস্তা ধরেই স্কুল যাতায়াত করে। ফলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। এমনকি রাতবিরেতে বিপদ অপদে রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল নিয়ে যেতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীদের বলে অভিযোগ।

জানা গেছে, পোলেমপুর থেকে নবগ্রাম পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার এই রাস্তাটি জেলা পরিষদের অধীনে ছিল। তৎকালীন সময়ে জেলা পরিষদের তরফ থেকে রাস্তাটি তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু, তারপর থেকে সংস্কারের কাজ করা হয়নি। রাস্তাটি বেহাল দশা নিয়ে এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এমনকি গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই রাস্তা সরাইয়ের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর রাস্তাটি মেরামতের জন্য আশ্বাস দেওয়া ও উদ্যোগ নেওয়া হয়। মোট ২১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে ২১ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হলেও সেই কাজ এখনো শুরু হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

 এলাকাবাসীদের দাবি, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত দপ্তর ও স্থানীয় বিধায়কের কাছে বারবার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও রাস্তাটি সারানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই এমন রাস্তা থাকার চেয়ে না থাকার জন্যই বাধ্য হয়ে  রাস্তাটি কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবিন বাগ বলেন, রাস্তাটি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা রয়েছে। রাস্তাটি সরানোর জন্য এর আগেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

অন্যদিকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা বলেন, রাস্তাটি বাংলা সড়ক যোজনার তৃতীয় পর্যায়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললে খুব শীঘ্রই রাস্তাটি কাজ শুরু করা হবে। এদিকে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের পরিমান যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে এখন প্রশাসনের আশ্বাসে আদৌ কতটা চিঁড়ে ভেজে তা সময়ই বলবে বলে জানিয়েছেন কামালপুরের বাসিন্দারাই।

আরো পড়ুন