ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: জল জীবন মিশন সহ অন্যান্য প্রকল্প বাবদ গত প্রায় চার মাস ধরে রাজ্যে বিভিন্ন জেলার ঠিকাদারদের সরকারের কাছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বকেয়া হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে বেশিরভাগ ঠিকাদার আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে একদিকে যেমন প্রকল্পের কাজের গতি শ্লথ হয়ে গেছে, অন্যদিকে অনেক জায়গায় আর্থিক অনটনে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। আর এই বকেয়া অর্থ অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে গোটা রাজ্য জুড়ে জেলায় জেলায় পিএইচই কন্ট্রাক্টরস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বুধবার জেলার জেলাশাসক ও এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করলো সদস্য ঠিকাদারেরা।

পূর্ব বর্ধমান জেলার পিএইচই কন্ট্রাক্টরস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ’২০২০ সাল থেকে সারা রাজ্যের সাথে আমাদের জেলাতেও জল জীবন মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় প্রত্যেক বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের কাজের সদস্য ঠিকাদারেরা প্রাণপাত পরিশ্রম করে এই কাজকে বাস্তবায়িত করে চলেছেন। বর্তমানে প্রায় চার মাস এই প্রকল্পের সমস্ত কাজের পেমেন্ট বন্ধ থাকায় আমাদের জেলায় এই সমস্ত কাজের ঠিকাদারগণ অভূতপূর্ব আর্থিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক লোন ছাড়াও বেসরকারি ভাবে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এমনকি নিজের বসত বাড়ি বন্ধক দিয়েও অর্জিত পুঁজি জল জীবন প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বাধ্য হয়েছেন এই কাজের ঠিকাদারগণ।
এইরকম পরিস্থিতিতে প্রায় পুঁজিশূন্য অবস্থায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজের গতি স্লথ হয়ে গেছে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আন্তরিক অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। জল জীবন প্রকল্প ছাড়াও ২০২১, ২০২৩, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন এর কাজ বাবদ, পাড়ায় সমাধান সহ বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ ২২কোটি টাকা রাজ্যের কাছে পাওয়া রয়েছে। ফলে পিএইচই ঠিকাদারদের মোট ১২২কোটি টাকা বকেয়া হয়ে আছে সরকারের কাছে।
এমতাবস্থায় এসোসিয়েশনের সদস্যরা সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব জল জীবন মিশন সহ বাকি প্রকল্পের কাজের বকেয়া পেমেন্ট প্রদান নিশ্চিত করে এই জেলার এই প্রকল্পের কাজের গতি যাতে স্বাভাবিক হয় তার সুবন্দোবস্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার। পাশাপাশি আর্থিক দুর্দশাগ্রস্থ সমস্ত ঠিকাদারদের পাশে থেকে আগামীদিন সমস্ত প্রকল্পের কাজ যাতে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করার।