বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের লহর থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ১২জন নিরাপত্তা রক্ষী সাসপেন্ড

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের লহর থেকে মঙ্গলবার এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়েই সব মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই এর পক্ষ থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা করা হয়েছিল নিরাপত্তার বিষয়ে। বর্ধমান থানার পুলিশও গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করে। পাশপাশি খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও গোটা ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করা হয়। আর এরপরই নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বারো জন নিরাপত্তা রক্ষীকে কর্তব্যে অবহেলার জন্য সাসপেন্ড করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক, অধ্যাপক থেকে কর্মচারীদের মধ্যে। অস্থায়ী ১২জন নিরাপত্তা কর্মীকে এক ধাক্কায় সাসপেন্ড করে দেওয়ায় আর্থিকভাবে দুর্বল এই কর্মীদের ভবিষ্যত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাংশ দুশ্চিন্তার বিষয় বলে মত প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এরা সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অপারেটিভের মাধ্যমেই এদের নিয়োগ করা হয়। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনান্য নিরাপত্তা কর্মীদের দিয়ে এদের মধ্যে সাতজনের অতিরিক্ত কাজ করানো হবে। যারা এই অতিরক্তি কাজ করবেন তাদের ওভারটাইম দেওয়া হবে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কর্মচারি সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও মানবিকতার খাতিরে এই নিরাপত্তাকর্মীদের ভুল শুধরে আরো একবার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অনুরোধ জানাবেন বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এও বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে কোন রকম আপোষ করা হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তঃবর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেটি কবেকার তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে একজন মহিলা লহরের দিকে দু তিন বার যাচ্ছেন, আবার চলে আসছেন। পরে একটা সময়ে তিনি ঢুকলেন আর বেরিয়ে আসেননি। লহরে উদ্ধার হওয়া মহিলাই সেই মহিলা কিনা এসব নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে আমাদের মধ্যেও। পুলিশও তদন্ত করছে। মহিলা মানসিকভাবে সুস্থ ছিল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে একজন মহিলা, তিনি যেমনই হোন না কেন, এভাবে ঢুকলেন, দীর্ঘসময় থাকলেন অথচ নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে আসবে না! নিরাপত্তা কর্মীরা কোথায় ছিলেন?  কি করছিলেন? গাফিলতি তো রয়েছেই। এই কারনেই আমি এস্টেট অফিসারের মাধ্যমে রেজিস্টারের কে নির্দেশ দিয়েছি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বারোজন কর্মীকে সাসপেন্ড করে দেবার জন্য।’

ডিএসপি রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘ এখনও পর্যন্ত মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তেমন কোন উল্লেখযোগ্য রহস্য তদন্তে উঠে আসেনি। ময়নাতদন্তের প্রাথিমক রিপোর্টে জলে ডুবে মৃত্যুর কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। মৃত মহিলার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিলো না। মহিলা মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না বলেও প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে। তবে তদন্ত জারি রয়েছে। ময়নাতদন্তের সম্পূর্ন রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’

আরো পড়ুন