ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: ইনফর্মেশন আগে থেকেই ছিলো পুলিশের কাছে। সেই অনুযায়ী বুধবার দুপুরে মেমারি থানার পুলিশের একটি দল সঙ্গে জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের একটি টিম যৌথভাবে এসডিপিও (দক্ষিণ) অভিষেক মন্ডলের নেতৃত্বে অভিযানে গিয়ে রীতিমত কালঘাম ছুটলো পুলিশের। প্রায় তিন ঘন্টা তল্লাশি চালানোর পর বাড়ির ভিতর ছাগল রাখার গোয়াল ঘরের নিচে তৈরি করা গোপন জায়গা থেকে উদ্ধার হলো প্রায় ৪৭ কেজি গাঁজা। এরই পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে ৫০০, ১০০, ২০০ টাকার বান্ডিল সহ ৪১ লক্ষ ৮৭হাজার ২৮০টাকা।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংগীতা সাহানি নামে এক মহিলাকে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ধৃত মহিলার কাছে আরো গাঁজা ছিল, সেইসব বিক্রি করার পর এই বিপুল পরিমাণ টাকা লুকিয়ে মজুদ করে রাখা ছিলো গোয়াল ঘরে। পরবর্তীতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করবে বলে পুলিশ জানিয়েছে এদিন।
এদিন সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ’মেমারি শহরের ১নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্টি পাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪৭কেজি গাঁজা সহ ৪১ লক্ষ ৮৭হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক মহিলা কে। প্রাথমিকভাবে জানতে পারা গেছে, এই মহিলার মা লালপরী সাহানিও এর আগে গাঁজা কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলো। জেলও খেটেছে। ধৃত মহিলাকে আগামীকাল বর্ধমান আদালতে পেশ করে তদন্তের স্বার্থে পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে। পরবর্তীতে ধৃতের কাছ থেকে এই কারবারের সঙ্গে আরো কারা জড়িত এবং এই কারবারের জাল কতদূর বিস্তৃত সেই সম্মন্ধে খোঁজখবর করা হবে।’
অ্যাডিশনাল এসপি অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া এই বিপুল পরিমাণ টাকা গোনার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। ব্যাংক কর্মীরা টাকা গোনার মেশিন নিয়ে এসে সমস্ত টাকা গুণে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেয়। তিনি জানিয়েছেন, ধৃত মহিলা কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারা গেছে যে, এই মহিলা বাড়ি থেকেই গাঁজার কারবার চালাতো। ছোট, বড় এবং ১কেজির প্যাকেটে গাঁজা সরবরাহ করা হতো। ছোট পুড়িয়া ৫০ টাকা, বড় পুড়িয়া ১০০টাকা দরে বিক্রি হতো। এদিন উদ্ধার হওয়া ৪৭ কেজি গাঁজার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানাতে পেরেছে।
এদিকে থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে মেমারি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়ির নাগালের মধ্যেই এই বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়েছে মেমারি জুড়ে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এই বাড়ি থেকে গাঁজার কারবার চলে এলাকার অনেকই নাকি জানতো। তাদের প্রশ্ন, তাহলে এর আগে কেনো এই বিষয়ে পুলিশ পদক্ষেপ করেনি? মেমারি থানায় নতুন অফিসার আসার পর এতদিনে ধরা পড়লো গাঁজার কারবারি। পুলিশের পদক্ষেপে খুশি এলাকাবাসী।