পূর্ব বর্ধমানে ভোটের ময়দানে দেখা নেই বিজেপির, সুযোগ বুঝে ঘর গোছাচ্ছে তৃণমূল, সিপিএম, হতাশ বিজেপি কর্মীরা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানে ভোটের ময়দানে এখনও টিম বিজেপিকে দেখাই যাচ্ছে না। 

বিজ্ঞাপন
কিছু জায়গায় স্ট্রিট কর্নারের কায়দায় বিক্ষিপ্ত সভার আয়োজন হলেও বাস্তবে জেলা জুড়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় কার্যত বেশ হতাশ সর্বক্ষণের দলের নেতা কর্মীরা। অন্যদিকে জেলাজুড়ে ওয়ার্ম আপ চলছে তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে। খেলা হচ্ছে – অত্যন্ত হালকা চালে। সকলেই অপেক্ষায় রয়েছেন বিজেপি পূর্ব বর্ধমান জেলায় কি টিম নামায় তার দিকেই। কিন্তু তারই মাঝে গোটা মাঠ ঘুরে দেখছেন তৃণমূল, সিপিএম। 

মাঠের কোথায় ঘাস বেশি, কোথায় গর্ত বা কোথায় বাউন্স কেমন – সবই দেখে নিচ্ছেন খেলোয়াড়রা। প্রয়োজনে কোথায় কোথায় ঘাস কেটে ছেঁটে খেলার উপযোগী করতে হবে তাও তাঁরা মেপে নিচ্ছেন বলা যায়। বর্ধমানের গলসী বিধানসভা থেকে জামালপুর সর্বত্রই এখন চলছে দলীয় প্রার্থীদের জোরদার মাঠ পর্যবেক্ষণ পালা। শুধু তাইই নয়, নিজেদের অনুকূলে সমর্থক, মাঠে খেলার সময় যেন তাঁরা জোরদার সমর্থন দেয় – তারও চেষ্টা চালাচ্ছে জোর কদমে।

রায়না থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে গলসি বিধানসভায় প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের নেপাল ঘড়ুইকে। গলসীতে চুড়ান্ত দলীয় গোষ্ঠীবাজির মধ্যে তাঁকে প্রার্থী করার পর গত কয়েকদিনে সমস্ত তৃণমূলের গোষ্ঠী নেতাদের সঙ্গেই তিনি আলোচনায় বসেছেন। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক প্রচার কর্মসূচিও সারছেন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে। ফলও পাচ্ছেন বলে দাবী প্রার্থীর। এমনকি গোষ্ঠী ভুলে সকলেই তাঁর প্রচারে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেমেছেন বলে দাবী নেপাল ঘনিষ্টদের। কিন্তু তারপরেও পিচের চোরা গর্ত নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। 

শুধু গলসীই নয়, বর্ধমান দক্ষিণ, বর্ধমান উত্তর, রায়না, খণ্ডঘোষ, মেমারী, জামালপুর সর্বত্রই একই ছবি। জামালপুরের খেলার মাঠে অসংখ্য গর্ত বোঁজাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে তৃণমূলের প্রার্থী অলোক মাঝিকে। আদপেই তিনি কতটা মাঠ মেরামত করে খেলতে পারেন – তাই এখন দেখার। নাকি চোরা গর্তে পা পরবে – তাও দেখার জন্যে এখন মুখিয়ে রয়েছেন জামালপুরের ভোটাররা। যদিও সোমবারই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির নির্দেশে জামালপুরের ব্লক সভাপতি পরিবর্তন করে মেহমুদ খানকে দায়িত্বে আনা হয়েছে। পূর্ববর্তী ব্লক সভাপতি শ্রীমন্ত রায়কে জেলার সাধারণ সম্পাদক করে সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছে দল। যদিও খোদ প্রার্থী অবশ্য তাঁর জেতার ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত।

এদিকে বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস, সিপিএম প্রার্থী পৃথা তা, বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী নিশীথ মালিক, সিপিএম প্রার্থী চণ্ডীচরণ লেট, রায়নার তৃণমূল প্রার্থী শম্পা ধাড়া থেকে খণ্ডঘোষের তৃণমূল প্রার্থী নবীন বাগ সকলেই এলাকায় এলাকায় ঘুরে প্রচার সারেছেন। বয়স্ক মানুষদের কাছ থেকে আশীর্বাদও নিচ্ছেন। আবেদনও করেছেন তাঁকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার। প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন, জিতলে এলাকার সমস্যার সমাধানও করে দেবেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ভোটের পারদ একটু একটু করে চড়তে শুরু করছে। 

এদিকে গেরুয়া শিবিরের খবর ২৩ মার্চের ৪-৫দিন আগে ঘোষণা হতে পারে পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি বিধানসভার প্রার্থী তালিকা। স্বাভাবিকভাবেই দলের কর্মী সমর্থকরা কিছুটা হতাশ। কারণ শাসক দল বা সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা যখন মাঠ মেপে নেওয়ার সুযোগ নিচ্ছে, তখন কার্যত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে তাদের। যদিও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হলেও ইতিমধ্যেই বিজেপি কর্মীরা দেওয়াল দখল করে রেখেছেন। কোথাও কোথাও তাঁরা প্রচারও চালাচ্ছেন বিজেপিকে ভোট দেবার আবেদন দিয়ে। এখন সময়ের অপেক্ষা সর্বসম্মত প্রার্থীদের নিয়ে কবে মাঠে নামতে পারবে তারা।

আরো পড়ুন