---Advertisement---

ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে এবার সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের পরিকল্পনা কর্মীদের, দেশের সাংসদদেরকেও দেওয়া হবে স্মারকলিপি

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ব্যাঙ্ক বেসরকারী করণের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের পাশাপাশি দেশের প্রত্যেক সাংসদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন স্টেট ব্যংক অফ ইন্ডিয়া অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন বেঙ্গল সার্কেলের অন্তুর্গত বর্ধমান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জোনাল কমিটি। শনিবার বর্ধমান টাউন হলে চল্লিশতম বার্ষিক সাধারণ সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এদিন এই সভার উদ্বোধন করেন এ আই বি ও সি এবং এ আই এস বি ও এফের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত। অন্যান্যদের মধ্যে এদিন উপস্থিত ছিলেন ডি জি এম, বি অ্যান্ড ও, বর্ধমান অজিত কুমার পোদ্দার, এস বি আই ও এ, বেঙ্গল সার্কেলের সভাপতি অসিতাভ কুন্ডু, এস বি আই ও এ, বেঙ্গল সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, স্টেট ব্যংক অফ ইন্ডিয়া অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের জোনাল সভাপতি প্রমোদ কুমার, স্টেট ব্যংক অফ ইন্ডিয়া অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের চিফ রিজিওনাল সেক্রেটারী প্রবীর সরখেল প্রমুখরা। 

বিজ্ঞাপন
এদিনের সভায় পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলা থেকে প্রায় ৬০০ প্রতিনিধি হাজির ছিলেন। বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে আগামি ১৫ ও ১৬ মার্চ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাংক ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘট সফল করার বিষয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এদিন সৌম্য দত্ত জানিয়েছেন, এবারের বাজেটে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং ১ টি বীমা সংস্থা বেসরকারীকরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এরফলে নতুন রূপে মহাজনী ব্যবস্থা ফিরে আসবে। দেশের বর্তমান শাসক দলের পৃষ্ঠপোষক শিল্পপতিদের হাতে সরকারী লাভজনক সংস্থাগুলো তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান সরকার। বর্তমানে ৩৪৮ টি সেন্ট্রাল পাবলিক সেক্টার এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। এগুলির মধ্যে ২৪৮ টি চালু রয়েছে। এগুলি থেকে মোট লাভ ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা। আর ৩৪৮ টার মধ্যে মোট ক্ষতি ৩১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। 
কর্পোরেটদের কাছ থেকে ২০১৮-২০১৯ বর্ষে মোট ট্যাক্স আদায় হয়েছে ৬.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা, ২০১৯-২০২০ বর্ষে মোট ট্যাক্স আদায় হয়েছে ৫.৫৬ লক্ষ কোটি টাকা, আর ২০২০-২০২১ বর্ষে এখনও পর্যন্ত মোট ট্যাক্স আদায় হয়েছে ৪.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা। কর্পোরেট সংস্থাগুলোকে ট্যাক্স ছাড় দিয়ে দিয়ে আয় কমছে। আর ঘাটতি পূরণ করতে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, পরিকল্পিতভাবে শিল্পপতিদের হাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে তুলে দেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে, বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরাও মহাজনদের আগ্রাসনের মুখে পড়বে। এরই পাশাপাশি এদিন সৌম্যবাবু অভিযোগ করেছেন, বারবার বলা সত্ত্বেও সরকার ঋণখেলাপী শিল্পপতিদের তালিকা প্রকাশ করছে না। ঋণখেলাপীরাই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কিনছে কিনা তাও সরকার জানাচ্ছে না। দু-একজন নীরব মোদী, বিজয় মালিয়ার নাম প্রকাশ হলেও, সরকারী মদতেই দেশ ও বিদেশে বহাল তবিয়তে রয়েছে হাজার-হাজার ঋণখেলাপী দেশের শিল্পপতি। 
এদিন সৌম্য দত্ত জানিয়েছেন, বেসরকারিকরণের পাশাপাশি নতুন সমস্যা একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে সংযুক্তিকরণ করা। ২০১৮ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৯৬৯ সালে ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পর সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মোট শাখার সংখ্যা ছিল ৮২৬১ টি, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টি। ব্যাংক সংযুক্তিকরণের ফলে এই শাখার পরিমাণ অনেক কমে যাবে, পাশাপাশি কমবে এ টি এম-এর সংখ্যাও। শাখাগুলোকে লাভজনক নয় বলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র যেমন ছোট হবে তেমনি গ্রাহকদের পরিষেবার ক্ষেত্রও কমে যাবে।স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতিতে বড় ছাপ ফেলতে চলেছে এই বেসরকারিকরণ ও সংযুক্তিকরণ। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংঙ্কগুলিতে নিয়োগ হচ্ছে না। এদিকে গ্রাহক বেড়েই চলেছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে। ফলে কর্মীরা সাধ্যমত চেষ্টা করলেও কোথাও কোথাও সামান্য ত্রুটি থাকতে পারে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি সাধারণ মানুষের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দিকে সাধারণ মানুষকে ঠেলে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা চলছে। এদিন তিনি জানিয়েছেন, বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রচার করা হবে। পাশাপাশি দেশের প্রত্যেক সাংসদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে সমস্যার কথা জানান হবে, যাতে তাঁরা এই অনৈতিক বিল আনার বিরুদ্ধে সংসদের দুই কক্ষেই সোচ্চার হন।
See also  বর্ধমানে নার্সিং হোস্টেল চত্বরে ভয়াবহ আগুন, চাঞ্চল্য
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---