আসন্ন বোরো চাষে গলসীর দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ হাজার কৃষক জলের দাবী জানালেন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ১৯৩০ সালের ইতিহাসকে শুধু ফিরিয়ে আনা নয়, ১৯৩০ সালে যে সহানুভূতি পেয়েছিলেন গলসী ২নং ব্লকের কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন প্রায় ২০ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী, প্রায় ৯০ বছর তাঁরাই ফের দাবী করলেন সেই সহানুভূতির। কুরকুবা অঞ্চলের চাষীরা জেলা প্রশাসনের কাছে গণস্বাক্ষর দিয়ে দাবী জানালেন শুরু হতে চলা বোরো চাষে দামোদরের ১ বিসি ক্যানালের মাধ্যমে সেচের জল দেওয়ার জন্য। 

বিজ্ঞাপন

কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহিরঘন্যা গ্রামের চাষী সফর মল্লিক জানিয়েছেন, ১৯৩০ সালে যখন রণডিহায় দামোদর নদীতে বাঁধ দিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে সেচের জল দেওয়া শুরু হয়, সেই সময় প্রথম তাঁদের এই এলাকার জমিতে তাঁরা জল পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ১৯৮০ সাল থেকে বেশ কয়েকবছর তাঁদের জল না দেওয়ায় ভয়াবহ সংকট দেখা দেয় দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ১৮ হাজার একর পরিমাণ কৃষি জমিতে। এর পরবর্তীকালে লাগাতার আবেদন নিবেদন করার পর ২০১৭-২০১৮ সালে তাঁদের জল দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮-২০১৯ সালে জলাধারে জল না থাকায় জল দেওয়া হয়নি। যদিও গতবছর তাঁরা ১৩৯ চেন পর্যন্ত জল পেয়েছিলেন। এর ফলে বোরো চাষে কিছুটা সহায়তা পেলেও ওয়ান বিসির শেষ পর্যন্ত জল না পৌঁছানোয় বহু জমিতে চাষে জল সংকট দেখা দেয়। 
সফর মল্লিক জানিয়েছেন, গলসীর কুরকুবা এবং সাটিনন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার জমি কেবলমাত্র ধান চাষের উপযোগী। ফলে এই এলাকায় ধান ছাড়া অন্য চাষ হয়না। এমতবস্থায় প্রতি বছরই তাঁদের বোরো চাষের জলের জন্য হাহাকার করতে হয়। তিনি জানিয়েছেন, এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জীবনজীবিকা সমগ্রটাই ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এবং বোরো মরশুমে জলের অভাবে ধান চাষে সংকট দেখা দেওয়ায় এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতিও চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। 

তিনি জানিয়েছেন, এই ওয়ান বিসি ক্যানাল ছাড়া এই এলাকায় সেচের জন্য শ্যালো, সাবমার্সিবল বা ডিপ টিউবওয়েল নেই। এছাড়াও চলতি বছরে করোনা জনিত কারণেও অন্যান্য এলাকার মতই এই এলাকাতেও আর্থিক সংকট চরমে উঠেছে। এমতবস্থায় ডিভিসির জল না পেলে গোটা এলাকার চাষী পরিবারগুলি চরম সংকটের মুখে পড়বেন। সফর মল্লিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে তাঁরা গণস্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিবছর বোরোতে জল পাবার দাবী জানিয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে তাঁরা বিবেচনা করছেন।

আরো পড়ুন