ডিসল্যাক্সিয়া শিশুদের জন্য এ্যাপস তৈরী করে বিশ্বের নজরে বর্ধমানের সৌরদীপ

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্র ডিসল্যাক্সিয়া শিশুদের জন্য লার্নিং এ্যাপস তৈরী করে এবার গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিল। বর্ধমান শহরের ইছলাবাদের বাসিন্দা সৌরদীপ সরকারকে ইতিমধ্যেই আমেরিকা থেকে ডেকেও পাঠানো হয়েছে। শনিবার সৌরদীপের স্কুল বর্ধমানের সেমফোর্ড ফিউচারিষ্টিক স্কুলের পক্ষ থেকে তাকে সম্বর্ধিত করা হল। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল এ স্টিফেন রাজ, স্কুল ম্যানেজার মৌমিতা সূত্রধর মণ্ডল, অভিভাবক পরিষেবার বিভাগীয় প্রধান সুশান্ত ঘোষ সহ কমপিউটার শিক্ষক উৎসব মিত্র, সোহিনী চৌধুরী প্রমুখরাও। 

বিজ্ঞাপন

মৌমিতা জানিয়েছেন, সৌরদীপ এই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। মৌমিতার বাবা শুভদীপ সরকার পোষ্ট অফিসে কর্মরত। মা স্বপ্না সরকার গৃহবধু। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি বেশ কিছুদিন ধরেই সৌরদীপ কমপিউটারের এ্যাপস তৈরীর জন্য চেষ্টা করছিল। কমপিউটার শিক্ষক উৎসব মিত্র জানিয়েছেন, সৌরদীপের এই আগ্রহ তাঁর নজরে পড়ে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি দেখতে পান সৌরদীপ সেই সমস্ত শিশু যাঁরা ডিসল্যাক্সিয়ায় আক্রান্ত – যাদের অক্ষর চিনতে অসুবিধা হয় তাদের নিয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে। এরপর সৌরদীপ কে উৎসাহ দিতেই সে ওই শিশুদের জন্য এ্যাপস তৈরীর কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যেই গুগল সৌরদীপের এই এ্যাপস নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছে। শুধু গুগলই নয়, ইতিমধ্যেই নাসা থেকেও সৌরদীপকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। 

মৌমিতা সুত্রধর মণ্ডল জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বের ক্ষুদে এই কমপিউটার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যে ১২জনের তালিকা তৈরী করেছে তাতে ঠাঁই নিয়েছে সৌরদীপ। করোনা সংক্রান্ত পরিস্থিতি তৈরী না হলে মার্চ মাসেই আমেরিকার সিলিকন ভ্যালিতে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মুখোমুখি হতে হত সৌরদীপকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য ওই কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। মৌমিতা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সৌরদীপের এই এ্যাপস গুগলের প্লে স্টোরে স্থান পেয়েছে। যা তাঁদের স্কুলেরও গৌরব বাড়িয়ে দিয়েছে।

 উল্লেখ্য, সম্প্রতি এডুকেশন ওয়ার্ল্ডের বিচারে এই স্কুল কে বর্ধমানের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারী স্কুল হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়াও এসওএফ অলিম্পিয়ার্ড পরীক্ষায় জেলার মধ্যে সেরা স্কুল হিসাবে বিবেচিত হয়েছে বর্ধমান সেমফোর্ড ফিউচারেস্টিক স্কুল। ইতিমধ্যেই এই স্কুল সিবিএসসি- এর অনুমোদন পেয়েছে। স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল এ স্টিফেন রাজ জানিয়েছেন, সেমফোর্ড ফিউটারেস্টিক স্কুল বর্ধমান, শুধুমাত্র ক্লাসরুম শিক্ষায় সীমাবদ্ধ না থেকে ছাত্রছাত্রীদের এমনভাবে গড়ে তুলতে চায় যাতে তারা ভবিষ্যতের সুনাগরিক হতে পারে। এই পরিবর্তনশীল সমাজে ছাত্রছাত্রীরা যেন শারীরিক এবং মানসিকভাবে সক্ষম হয় এবং তাদের নিজস্ব প্রতিভাকে বিকশিত করে তাদের ভবিষ্যৎ বাধা বিপত্তি কাটিয়ে স্বনির্ভরশীল হয়ে ওঠে। 

আরো পড়ুন