ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের ঐতিহাসিক স্থাপত্য তথা জেলার মুখ, সর্বোপরি শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত কার্জন গেটের সামনে জিটি রোডের দু দিকে এবং কোর্টের দিকে একশ মিটারের মধ্যে এলাকাকে বিজ্ঞাপন মুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করল বর্ধমান পৌরসভা। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই এলাকায় থাকা সমস্ত বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং, ফ্লেক্স, ব্যানার খুলে বা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রত্যেক বিজ্ঞাপন এজেন্সির কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে পৌরসভা। জানা গিয়েছে, গত ১০ই মে পুরসভার পক্ষ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে। কার্জন গেট বর্ধমানের একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধ। এই স্মৃতি সৌধের চারিপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় বাণিজ্যিক কারণে কোনওরকম বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। যে বিজ্ঞাপন গুলি রয়েছে সেগুলি খুলে নিতে হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্জন গেট থেকে জেলাশাসকের অফিসের আগে নেতাজী মূর্তি পর্যন্ত কোথাও কোন বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞাপন থাকবে না। এই এলাকায় খুব প্রয়োজনে শুধুমাত্র সরকারি বিজ্ঞাপন থাকতে পারে। একইভাবে কার্জন গেটের সামনে ডান ও বাম দিকে ৩০০ফুট এলাকায় কোনো বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং, ব্যানার, ফ্লেক্স আর লাগানো যাবেনা। এমনকি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য সমস্ত কাঠামো বিন্যাস ( structure arrangment) সরিয়ে নিতে হবে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলিকে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরে বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার এক নির্দেশে ওই এলাকায় থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার এজেন্সী গুলিকে জানিয়ে দিয়েছেন সাত দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে এলাকা পরিস্কার করে দিতে হবে। অন্যথায় পুরসভা ব্যবস্থা নেবে।
বৃহস্পতিবার পুরসভার পক্ষ থেকে আধিকারিক ও কর্মীরা এলাকা পরিদর্শন করতে আসেন। কার্জন গেট থেকে চারিপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকা ফিতে দিয়ে মেপে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। পুরপ্রধান পরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, ‘কার্জন গেট আমাদের গর্ব। তাকে সাজিয়ে রাখার পাশাপাশি এই ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধটির সামনে যেভাবে বিজ্ঞাপনের হোডিং, ব্যানার থাকছিল তাতে খুবই দৃষ্টিকটু লাগত। জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরাও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার পরেই এই সিধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোন রাজনৈতিক দলের প্রচার এক বা দু দিনের জন্য হয়। তবুও আমরা সে বিষয়েও সজাগ থাকবো।’
তবে পুরসভার এই আচমকা সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন বিজ্ঞাপন সংস্থা গুলির কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, পুরসভার অনুমতি নিয়েই কার্জন গেট সংলগ্ন এলাকায় বিজ্ঞাপনের জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করেছেন তারা। সেখানে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বিজ্ঞাপনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের চুক্তি রয়েছে। এমনকি একাধিক সংস্থার রুটি রুজি চলে এই বিজ্ঞাপন বাবদ প্রাপ্ত টাকায়। এই পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই মাত্র সাতদিনের একটা সময়সীমা জানিয়ে চিঠি ধরিয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞাপনদাতার বিজ্ঞাপন মাঝপথে বন্ধ করে দিলে চরম সমস্যায় পড়বেন তারা। এছাড়া যেকোনও দিক থেকেই কার্জন গেট ঢেকে যাবে এমনভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেছেন তারা। এই বিষয়ে শুক্রবারই পুর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্ণধার তিলক দুবে।