এদিন জেলাশাসক মহম্মদ এনাউর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, জেলা মুখ্যস্বাস্থ্যাধিকারিক ডা. প্রণব রায়, ডেপুটি স্বাস্থ্যাধিকারিক সুনেত্রা মজুমদার সহ অতিরিক্ত জেলাশাসকরা বর্ধমান ষ্টেশন ঘুরে দেখেন। জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার উভয়েই জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেকটি ষ্টেশনে থাকছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। থাকছে থার্মাল স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থাও। ষ্টেশনে ঢুকতে গেলে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া ষ্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এছাড়াও প্রতিটি ষ্টেশন এলাকায় থাকছে এ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও। এজন্য বেসরকারী এ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে সবরকমের আলোচনা সাড়া হয়েছে। এদিকে, প্রায় সাড়ে সাত মাস আগে ট্রেনের চাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে সাত মাস পর ষ্টেশনে ষ্টেশনে থাকা হুইলার, স্টলগুলি মঙ্গলবার থেকেই ফের খুলতে শুরু করে দিল। সাফ সুতরো করে বিক্রিবাটার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তাঁরা। শুধু তাইই নয়, রেলের ওপর ভরসায় থাকা বহু হকার যাঁরা ট্রেন বন্ধের ফলে অন্য কাজে যুক্ত হয়ে গেছিলেন তাঁরাও মঙ্গলবার থেকে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন।
এদিন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পূর্ব রেল সুবার্বাণ এলাকায় অফিস টাইমে বুধবার থেকে ১৪৮টি ট্রেন চালাতে চলেছে। স্বাভাবিক সময়ে যা ছিল ১৭৭টি। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব রেল সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রয়োজনবোধে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে রেলের সংখ্যা আরও বাড়াতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, বর্ধমান কর্ড লাইনে ১১ জোড়া, মেন লাইনে ১০ জোড়া এবং বর্ধমান কাটোয়া রুটে ৪ জোড়া ট্রেন চলবে বুধবার থেকে। কিন্তু ট্রেন এখনই চলছে না আসানসোল এবং বর্ধমান থেকে রামপুরহাট রুটে।
ফলে এই দুই রুটের যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। বর্ধমান বোলপুর রুটে দীর্ঘ ১৯৭২ সাল থেকে ট্রেনের নিত্যযাত্রী প্রদীপ ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, করোনার জেরে ট্রেন বন্ধ হওয়ার মত ইতিহাস দেখলেন। কিন্তু যখন অন্যান্য রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হল তখন বোলপুর রুটে না চলায় স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা বঞ্চিত থেকে গেলেন। কবে থেকে চলবে তাও এখনও জানানো হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, গড়ে প্রতিদিন বোলপুর থেকে বর্ধমানে ৮ -১০ হাজার নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন। ট্রেন বন্ধ হওয়ায় তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাসে যাতায়াত করছেন। অর্থও খরচ হচ্ছে বেশি। তাঁদের আবেদন বর্ধমান থেকে রামপুরহাটমুখী ট্রেনও চালু করা হোক। যদিও এব্যাপারে নিখিলবাবু জানিয়েছেন, বর্ধমান আসানসোল, বর্ধমান রামপুরহাট (ভায়া বোলপুর) রুটে এখনও ট্রেন চলাচল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত রেল জানায়নি।