
বিজ্ঞাপন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনা: অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগেও অন্ধ কুসংস্কার থেকে আজ যে সমাজের কিছু অংশ বেরিয়ে আসতে পারেনি তার জলজ্যান্ত প্রমান পাওয়া গেল সম্প্রতি একটি ঘটনায়। আজও কুসংস্কারের কালো মেঘ এক শ্রেণীর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের মাথার মধ্যে বিরাজ করছে। কুসংস্কারের থাবা যে এখনও জনসমাজকে গ্রাস করে রয়েছে, তা আরও একবার সামনে এল। ডাইনি অপবাদে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করার অভিযোগ উঠলো গ্রামেরই কয়েকজনের বিরুদ্ধে। কালনার অনুখাল পঞ্চায়েতের কবিলপাড়া গ্রামে সোমবার এমনি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আক্রান্ত গৃহবধূর নাম মামনি মান্ডি।

কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটলো মহিলার সঙ্গে? আদিবাসী সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের দাবি ডায়ান ধরেছে ওই মহিলাকে। আর এই ভেবে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে গৃহবধূকে ডায়ান তাড়ানোর নামে সোজা ওঝার দ্বারস্থ হয় পরিবার সহ কিছু গ্রামবাসী। দীর্ঘক্ষণ চলে নানান কায়দায় ঝাড়ফুঁক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কালনা থানার পুলিশ গিয়ে আক্রান্ত গৃহবধূকে উদ্ধার করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার প্রায় সন্ধে নাগাদ চিকিৎসার জন্য নিজের পারিশ্রমিক নিয়ে মনিব বাড়ি থেকে ফেরার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখোমুখি হতেই তারা অভিযোগ করেন ওই মহিলাকে ডায়ান ধরেছে। এর পরই সামাজিক সমস্ত বিদ্যা শক্তিকে এড়িয়ে গ্রামের লোক শুরু করেন নানান রকমের কেরামতি। তড়িঘড়ি ওঝাকে ডেকে গৃহবধূর ওপর চলে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। ঝাড়ফুঁকের নামে চুলের মুঠি ধরে চলে ডায়ান তাড়ানোর চেষ্টা। তাতেও গৃহবধূর শরীর থেকে ডায়ান যায়নি, সেই ভেবে চলে অকথ্য অত্যাচার।

এমনই অমানবিক ভাবে বেশ কয়েক ঘন্টা ঝাড়ফুঁক করার পর অসাড় হয়ে পরে গৃহবধূর শরীর। দীর্ঘক্ষণ ঝাড়ফুঁক করার পর মাটিতে লুটিয়ে পরেন ওই গৃহবধূ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কালনা থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আক্রান্ত ও আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।