ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পনের দাবিতে দিনের পর দিন অত্যাচার ও শেষে গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ গ্রেফতার করলো মৃত গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে। মৃত গৃহবধূর একটি ন’মাসের পুত্র সন্তান রয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে খণ্ডঘোষের খোরকোল গ্রামে।
বিজ্ঞাপন
মৃত গৃহবধূ জয়শ্রী কোঁয়ারের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে খণ্ডঘোষ থানার খোরকোল গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার সেনের সঙ্গে আউশগ্রামের ব্রজপুর গ্রামের জয়শ্রী কোঁয়ারের বিয়ে হয়। বিয়ের যৌতুক হিসাবে পাত্রপক্ষের দাবি মতো জয়শ্রীর পরিবার ১৬ভরি সোনার গহনা, খাট, আলমারি, শো-কেস, টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি দিয়েছিল। এরপরেও প্রায়ই বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য জয়শ্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করা হতো বলে দাদা ইন্দ্রজিৎ কোঁয়ার অভিযোগ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন, টাকা না দেওয়ার জন্য প্রায়ই বোনের উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালাতো জামাই রাজকুমার সেন ও শাশুড়ি রেবা সেন। এমনকি বন্দুক দেখিয়ে খুনের হুমকিও দিত বলে জয়শ্রী তাঁদের জানিয়েছিল। ইন্দ্রজিৎ বাবু অভিযোগে জানিয়েছেন, রাজকুমার প্রায়ই মদ্যপান করে বাড়ি আসতো। তা নিয়েও অসুন্তুস্ট ছিল বোন রাজশ্রী।
তিনি জানান, একাধিকবার রাজকুমার এবং তাঁর মা রেবা সেন কে অনুরোধ করাও হয়েছিল বোনের উপর অত্যাচার না করতে। কিন্তু ৬ এপ্রিল সকাল ১০টা৪০ নাগাদ রাজশ্রী ব্রজপুরের বাড়িতে ফোন করে জানায়, তাকে যেন এক্ষণি খোরকোল এর শ্বশুরবাড়ী থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। না হলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলবে স্বামী আর শাশুড়ি। সে এও জানায়, তারা তাকে ব্যাপক মারধর করছে ন’মাসের সন্তানের সামনেই। এরপরই ইন্দ্রজিৎ বাবু রাজকুমারকে ফোন করলে সে জানিয়ে দেয় ” তুই যা করতে পারিস করে নে”। এরপরই এদিনই দুপুর ১টা নাগাদ ফের রাজকুমার সেন ইন্দ্রজিৎ বাবুকে ফোন করে বলেন ” তোমার দিদি আর বেঁচে নেই”।
মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে মা রুপা কোঁয়ার, দাদা ইন্দ্রজিৎ কোঁয়ার তড়িঘড়ি খোরকোল গ্রামে পৌঁছায়। এবং খণ্ডঘোষ থানায় জামাই রাজকুমার সেন এবং শাশুড়ি রেবা সেনের বিরুদ্ধে রাজশ্রী কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত স্বামী এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে। বিচারক ধৃতদের তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ তারিখ ফের আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন।