বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: করোনা আতংকে যখন গোটা দেশ জুড়ে লকডাউন, সেই সময় নিজেদের অর্থনৈতিক বোঝা কমানোর জন্য রাজ্য বিদ্যুত দপ্তর এই পরিস্থিতির মাঝেই গ্রাহকদের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুক্রবারই এব্যাপারে একটি নির্দেশিকা জারীও করে দেওয়া হয়েছে। আর তারপরেই শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। একইসাথে বিভ্রান্তিও।
খোদ বিদ্যুত পর্ষদের ওই নয়া নির্দেশিকা অনুসারে চলতি লকডাউন পরিস্থিতিতে যেহেতু মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি বিদ্যুতের মিটার রিডিং নিতে যেতে পারবেন না। তাই তাঁদের বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট মিটার রিডাররা তাঁদের এলাকায় থাকা গ্রাহকদের জন্য একটি করে এষ্টিমেট বিল পাঠাতে। জানা গেছে, আগামী এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের যে বিল পাঠানোর কথা ছিল সেই বিলই এবার গ্রাহকদের হাতে পৌঁছাতে চলেছে এষ্টিমেট বিল হিসাবে। আর এই নির্দেশিকাকে ঘিরেই তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে খোদ বিদ্যুত দপ্তরের কর্মীদের মধ্যে।
কারণ এই এষ্টিমেট বিল দেবার পিছনে কি কারণ তা উল্লেখ করতে হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। সেক্ষেত্রে সাধারণত বিলে লেখা হয়- বাড়িতে কেউ ছিলেন না বা হাঁকাহাঁকি করেও কাউকে পাওয়া যায়নি কিংবা দরজা বন্ধ ছিল। জানা গেছে, নতুন এই পরিস্থিতির মাঝেই যে এষ্টিমেট বিল আসতে চলেছে তাতে উল্লেখ থাকবে দরজা বন্ধ থাকার জন্য মিটার রিডার মিটার রিডিং নিতে পারেননি। তাই সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে এষ্টিমেট বিল দেওয়া হয়েছে।
খোদ বিদ্যুত দপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, চলতি লকডাউন পরিস্থিতিতে বিদ্যুত দপ্তরের নিজস্ব ক্যাস কাউন্টার বন্ধ থাকলেও অনলাইন পেমেণ্ট বা কিয়স্কের মাধ্যমে পেমেণ্ট চালু রয়েছে। কিন্তু লকডাউনের মাঝে এই এষ্টিমেট বিল গ্রাহকদের কাছে গেলে তাঁরা কিভাবে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন তা নিয়েই তাঁরা শংকিত।
কেউ কেউ বলেছেন, লক ডাউনে যেহেতু সকলেই বাড়িতে ছিলেন তাই দরজা বন্ধ কথাটি আদপেই খাটে না। সেক্ষেত্রে গ্রাহক কেন এষ্টিমেট বিল দিতে যাবেন! সেক্ষেত্রে এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হতে পারে। উল্লেখ্য, লকডাউন পরিস্থিতিতে বিদ্যুত দপ্তরের নির্দেশিকা অনুসারে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল বকেয়ার কারণে কোনো বিদ্যুত সংযোগ ছিন্ন না করার নির্দেশ রয়েছে। একইসঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মিটার রিডারদেরও বাড়ি বাড়ি মিটার রিডিং নিতে না যাওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চলতি সময়ে এষ্টিমেট বিল দেওয়া নিয়ে নতুন করে সমস্যার মধ্যে পড়তে চলেছেন গ্রাহকরা।
এরই পাশাপাশি বিলের টাকা জমা দেবার জন্যও লকডাউন পরিস্থিতি কাটতেই হুড়োহুড়ি হবারও সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে বিদ্যুত দপ্তরের এহেন নির্দেশিকাকে ঘিরে নতুন করে আতংকের মুখে পড়তে চলেছেন গ্রাহকেরা। যদিও এব্যাপারে বর্ধমান বিদ্যুত দপ্তরের ডিভিশনাল ম্যানেজার সোহেল হোসেন জানিয়েছেন, চলতি সময়ে মিটার রিডার কিভাবে বাড়িতে মিটার রিডিং নিতে যাবেন ? প্রথমত, তাঁদের ঝুঁকি আবার গ্রাহকের কাছেও ঝুঁকির প্রশ্ন রয়েছে। তাই এষ্টিমেট বিলের নির্দেশ এসেছে দপ্তর থেকে। এছাড়াও স্টেশনারি সামগ্রী এই সময়ে নতুন করে আসছে না, এটাও একটা কারণ এই ব্যবস্থার।
তাছাড়াও তিনি কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, এই সময়কালে প্রচুর পরিমাণ টাকা অনাদায়ী থেকে যাবে তা আদায় করতে না পারলে। তাই এষ্টিমেট বিল দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে গ্রাহকরা যাতে সমস্যায় না পড়েন সেই বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। এষ্টিমেট বিল দিলেও পরবর্তী বিলের সঙ্গে তা এ্যাডজাষ্ট করা হবে। ফলে গ্রাহকদের আতংকের কিছু নেই।