বর্ধমান ডিআই অফিসের গাফিলতিতে ফেরত গেল শিক্ষকদের ৫৩লক্ষ টাকা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, বর্ধমান: বকেয়া এরিয়ারের টাকা পাওয়ার দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার বর্ধমান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে ডেপুটেশন দিল পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সমিতি। উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সমিতির রাজ্য সম্পাদক আলী হোসেন মিদ্যা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রথীন মল্লিক সহ জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রায় শ’খানেক শিক্ষক শিক্ষিকা। শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিযোগ, জেলার বকেয়া ইনক্রিমেন্ট প্রাপক শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রাপ্য টাকা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের উদাসীনতার জন্য তারা যথাসময়ে পাচ্ছেন না। অথচ জেলাশাসক নির্দিষ্ট সময়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার জন্য ৫২লক্ষ ৭৯হাজার ৩৭৪ টাকার( মেমো নং ৩১৯ এম ই,২৩.০৩.২০২২) ফান্ড অনুমোদন করে দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পরে ডিআই এর সঙ্গে কথা বলে ওনাকে যা বলার বলেছি। বাকিটা উনিই বলতে পারবেন।’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক বলেন,‘হাই-মাদ্রাসার শিক্ষকদের বকেয়া এরিয়ারের টাকা আমাদেরই ভুলের জন্য এবারে ফেরত চলে গেল। আমরা চেষ্টা করছি, নতুন করে সরকারের কাছ থেকে এই টাকা এনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়ে দেবার। আমাদের ভুলেই এটা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যাটা মেটানোর জন্য।’

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাদপ্তরে আবেদন করার পরে রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তর থেকে সমস্ত জেলার মাদ্রাসার শিক্ষকদের এরিয়ারের টাকা পাঠানো হয়। রাজ্যের সমস্ত জেলার হাই মাদ্রাসার শিক্ষকরা এই টাকা পেয়ে গেলও বর্ধমান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের গাফিলতিতে ৫২ জন শিক্ষক সেই টাকা পেলেন না।এমনকি মেদিনীপুর, হুগলি, নদিয়া, বাঁকুড়া, মালদা ও মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলার বকেয়া প্রাপক শিক্ষক শিক্ষিকাগণ তাদের প্রাপ্য এরিয়ারের টাকা ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন। সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,সমস্যার সমাধান না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের এই গড়িমসি কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বকেয়া টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে মার্চ মাসের শেষ দিনেও টাকা না আসায় এদিন বেলা ২ টো থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। চার বছর ধরে টাকা পড়ে থাকার পরেও কেন টাকা তারা পেলেন না সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি শ্রীধরবাবু। মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমিতির রাজ্য সম্পাদক আলী হোসেন মিদ্যা বলেন, ‘শুক্রবার মার্চ মাসের শেষ দিনেও টাকা না আসায় তাঁরা নিশ্চিত হয়ে যান আর টাকা পাওয়া যাবে না এই অর্থবর্ষে। 

তাঁরা জানিয়েছেন, ডিআই এর কাছে কেন এই ৫২ জন শিক্ষক সরকারের দিয়ে দেওয়া ৫৩ লক্ষ টাকা থেকে বঞ্চিত হলেন তার কৈফিয়েত চাইতেই এদিন জেলাশাসকের অফিসে যাওয়া হয়েছিল। উনি কার্যত মুখ নিচু করে নিজেই দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছেন। ওনার অফিসের কর্মীদের ভুলেই এই অবস্থা হয়েছে বলেই তিনি জানিয়েছেন। এপ্রিল মাসের মধ্যে ডি আই সরকারের কাছ থেকে টাকা ফেরত আনবেন বলে জানিয়েছেন। না পারলে সেদিন তাঁরাও বুঝিয়ে দেবেন আন্দোলন কাকে বলে।

আরো পড়ুন