---Advertisement---

সময় কাটাতে মোবাইল ফোন ই সঙ্গী অভিভাবকদের! অভ্যাস বদলাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যেই অভিনব উদ্যোগ পাল্লারোড পল্লীমঙ্গলের

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারী: করোনার কারণে ঘরে আবদ্ধ থেকে গত দুবছরে পড়ুয়া থেকে অভিভাবক তথা সমগ্র নাগরিক সমাজকে মোবাইলের ফোনের প্রতি অনেকটাই আসক্ত করে ফেলেছে বলে সমীক্ষা জানিয়েছে। পরিস্থিতির চাপে পড়ুয়াদের হাতেও মোবাইল ফোন তুলে দিতে হয়েছে অভিভাবকদের এই সময়কালে। টানা চলেছে অনলাইনে পড়াশোনা। এবার কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই শুরু হয়েছে স্কুল, অফলাইনে অর্থাৎ পরীক্ষা হলে বসে পরীক্ষা দেবার পালা। প্রায় দুবছর পর ছাত্র জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই পরীক্ষার্থীরা যেমন এই পরীক্ষা নিয়ে সিরিয়াস, তেমনি ছেলে মেয়েদের অভিভাবকরাও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।

বিজ্ঞাপন

 পরীক্ষার দিনগুলোতে সকালে ঘুম থেকে উঠে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার আগে পর্যন্ত তাদের ব্যস্ততার সীমা নেই। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত তিন ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে সময় কাটাতে মোবাইল ফোনই এই বাবা, মায়েদের কাছে হয়ে উঠছে প্রধান সঙ্গী! আর এবার অভিভাবকদের এই মোবাইল আসক্তি থেকে বিরত থাকার অভিনব উপায় বের করে একদিকে যেমন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতি, তেমনি বাবা, মায়েদের মধ্যে এই অভ্যাস তৈরির মাধ্যমে সেটা ছেলে মেয়েদের মধ্যেও আনার বার্তা দিতে চেয়েছে তারা।

 পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার জানিয়েছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের নানান কুপ্রভাব নিয়ে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে মানষিক চিন্তা নিয়ে হয়তো তিন ঘন্টা সময় অতিক্রম করা কঠিন। তাই মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকার বিকল্প হিসাবে তারা বিভিন্ন বই পড়ার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গল্প করে বা মোবাইল ঘেঁটে সময় পাড় করার থেকে বই পড়ে সময়ে কাটানো ঢের ভালো। তাই পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশে একটি ঘরে অপেক্ষারত অভিভাবকদের জন্য বই পড়ার ব্যবস্থা করেছে পাল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতি। তবে অবশ্যই শর্তসাপেক্ষে এই সুযোগ মিলবে। কি সেই শর্ত? 

শর্ত একটাই, সমস্ত অভিভাবকরা এই সময়টুকু অতিবাহিত করতে বই পড়ে কাটাবেন, অবশ্যই তাদের সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। মোবাইল ফোনকে নিজের থেকে দূরে রেখে বই পড়া অভ্যাস তৈরি করতেই এই ধরনের উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সদস্যরা। প্রসঙ্গত মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলোতে সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে দেখা যায় অভিভাবকদের ভিড়। রাস্তার ধারে, ছোট্ট দোকান ঘরে, বিভিন্ন জায়গায় বসে গল্প করে সময় কাটানো ছাড়া তাদের আর কোনও উপায় থাকেনা। 

আর আজকালকার দিনে হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করতেই ব্যস্ত সকলে। কিন্তু, বই যে এই সময়ের অনন্য সঙ্গী হতে পারে এই ভাবনা একদমই দেখা যায়না। এর মূল কারণ হিসেবে সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন, গল্পের বই পড়ার অভ্যাস ত্যাগ করে ফেলা। পরিবর্তে মোবাইলে আসক্তি। যদিও তারা জানিয়েছেন, অনেকের ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় পছন্দের বই সঙ্গে না থাকায় সেই সুুযোগ মেলে না স্কুলের বাইরে অপেক্ষার সময়। কারণ পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির পাশে এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয় লক্ষ্য করা যায় না। স্বাভাবিকভাবেই পাল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতির এহেন উদ্যোগে রীতিমত খুশি অভিভাবকরাও। তারা জানিয়েছেন, হাতের কাছে বই পড়ার এত ভালো সুযোগ মিললে যে কোন শর্তে সেই সুযোগ নিতে রাজি তারা।

ক্লাবের সম্পাদক সন্দীপন সরকার জানান, মানুষকে বই মুখী করার এত ভালো সুযোগ তারা হাত ছাড়া করতে চায়নি। বাস্তবে পাওয়াও যায় না। পরীক্ষার ৩ ঘন্টা সময় অভিভাবকরা বই পড়ে কাটাতে পারবেন। তবে শর্ত একটাই, হাতের ফোনটির সঙ্গে এই সময়ে সম্পর্ক সম্পুর্ন বিচ্ছেদ করে দিতে হবে। রেখে দিতে হবে চোখের আড়ালে। কেবলমাত্র বই পড়ার আনন্দ উপভোগ করার জন্যই এই ব্যবস্থা। ক্লাবের সদস্যরাই পুরো বিষয়টি দেখাশোনা করছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থার কথা জেনে অনেক অভিভাবকই পাশের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে নিজেদের সন্তানদের পৌঁছে দেওয়ার পর চলে আসছেন এখানে। সন্দীপন আশা প্রকাশ করেছেন, তাদের এই চিন্তাভাবনা যদি অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের মধ্যেও সঞ্চারিত করতে পারেন তাহলে সমাজের অনেকটা অংশ মোবাইল আসক্তি কাটিয়ে উঠে ঠিক একদিন ফের বই মুখী হয়ে উঠবেন।
See also  আবারো আগুনে জ্বলছে শুশুনিয়া পাহাড়ে, বন্যপ্রান ক্ষতির আশঙ্কা, তদন্তে পুলিশ
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---