ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার পাশাপাশি নতুন গতি আনা এবং সাধারণ যাত্রীদের সমস্যা সমাধানে বিশেষ নজরদারি শুরু করা হচ্ছে। শুক্রবার বর্ধমানে পাঁচটি জেলাকে নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এমনই জানালেন পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ জেলার পরিবহন আধিকারিকরা সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিক গণ।
মন্ত্রী বলেন,’যাত্রীরাই আমাদের সম্পদ। তাদের ভালো পরিষেবা দিতে পারার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করি। সেখানে যাত্রীদের কেন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এখন থেকে আমরা যাত্রী সমস্যার বিষয়টি মনিটারিং করব। আমি একটা হোয়াটস অ্যাপ নম্বর চালু করছি, সেই নম্বর আমার কাছেই থাকবে। যে কেউ তাঁর সমস্যার কথা ওই নম্বরে জানাতে পারবেন। সমস্যার বিষয়ে জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কারুর কোনো পরামর্শ থাকে তাও পর্যালোচনা করে দেখা হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন,’ আমাদের দপ্তরের কিছু অফিসার রয়েছেন যাঁরা ঠিকমত কাজ করেন না বলে অভিযোগ ওঠে, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিছু বাসের কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধেও যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। সেই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে আমরা ব্যবস্থা নেব। পরিবহন ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। বাম আমালে ভেঙে পড়া পরিবহন ব্যবস্থা কে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা অনেকটাই চাঙ্গা করতে পেরেছি। বাসের সংখ্যাও অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও গতি আনার লক্ষ্যেই আমরা রাজ্যের সর্বত্রই সভা করছি। উত্তরবঙ্গেও বৈঠক করা হবে। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থা অন্যান্য জায়গায় সেভাবে লাভ করতে না পারলেও বর্ধমানে এই সংস্থা অত্যন্ত ভালো ব্যবসা করে। তবে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে সেভাবে কোন ব্যবস্থা নেই। এই ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ গাড়ি রয়েছে যেগুলোর বয়স ১৫ বছর বা তার বেশী হয়ে গিয়েছে। গ্রীণ ট্রাইবুনালের নির্দেশে এই গাড়ি গুলিকে বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা একটি সমীক্ষায় দেখেছি একসঙ্গে এতো গাড়িকে বাতিল করে দিলে রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে। তাই আমরা এই আদেশের বদল চেয়ে আদালতে যাব। কারন এমন অনেক গাড়ি আছে যেটি খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে। সেভাবে রাস্তায় চলেনি। আমরা আদালতের কাছে এই আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাবো। রাজ্য সরকার এরজন্য আইনি লড়াই লড়বে।’
এদিন বৈঠকে অন্যান্য বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম ওভারলোডিং। রাস্তা খারাপ হবার পাশাপাশি গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে এই ওভারলোডিংয়ের কারণে বলে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট উঠে এসেছে। এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এদিন কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য স্পিডো মিটার লাগানোর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তির মেশিন বসানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।