ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান রমনাবাগান জুওলজিক্যাল পার্ক থেকে শুরু হল বন্যপ্রাণী দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়া। বুধবার বর্ধমান বনবিভাগের রমনা বাগান চিড়িয়াখানার চারটি বিভিন্ন প্রজাতির পশু পাখি দত্তক নিলেন কলকাতা ও বর্ধমান নিবাসী চারজন পশু প্রেমী মানুষ। এঁদের মধ্যে তিন বছর বয়সী এবং চার বছর বয়সী দুই শিশুও রয়েছে। বর্ধমান বন বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, আমাদের রাজ্যে প্রায় বছর দুয়েক আগে থেকেই আলিপুর ও দার্জিলিং এর চিড়িয়াখানা থেকে পশু পাখিদের দত্তক দেওয়ার কাজ শুরু হলেও বর্ধমানে এই প্রথম বন্যপ্রাণী দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হল।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানিয়েছেন, এরফলে একদিকে যেমন প্রকৃতিতে বসবাসকারী মানুষ এবং পশুদের ভারসাম্য রক্ষায় এই ব্যবস্থা কার্যকরী হবে, তেমনি বন্যপ্রাণীদের প্রতি মানুষ আরো বেশি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠবে। ডিএফও (District Forest Officer) জানিয়েছেন, পশু পাখিদের দত্তক নিতে চেয়ে বহু মানুষ ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন। বুধবার থেকেই প্রথম পশু পাখিদের দত্তক দেওয়ার কাজ সরকারিভাবে শুরু করা হল। তিনি জানিয়েছেন, এদিন কলকাতার দমদম নিবাসী এক দম্পতির তিন বছরের পুত্র সন্তান সৌর্য্য দেব একটি এমু পাখি দত্তক নিয়েছে।
এছাড়াও চার বছর বয়সী ঋতাভন মুখোপাধ্যায় নামে বর্ধমানের এক শিশুও একটি দেশি টিয়া পাখি দত্তক নিয়েছে। এরই পাশপাশি বর্ধমানের পশুপ্রেমী অর্ণব দাস একটি ময়ূর এবং রোশনি দাস ভট্টাচার্য্য একটি ময়ূর ও একটি রূপালী তিতির দত্তক গ্রহণ করেছেন। আগামী একবছর দত্তক গ্রহণকারী সকলে রাজ্য বন দপ্তরের নির্ধারিত প্রাণী প্রতি বাৎসরিক অর্থ জমা দিয়ে তাদের দেখাশোনা করতে পারবেন। যদিও এই সমস্ত পশু পাখিদের যাবতীয় পর্যবেক্ষণ, দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ত্ব থাকবে বন বিভাগের উপরই।
এদিন বিভাগীয় মুখ্য বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী ও সহকারী বনাধিকারিক সারদা সাহার উপস্থিতিতে দত্তক গ্রহণকারী সকলের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। অন্যদিকে রমনা বাগান চিড়িয়াখানার দত্তক নেওয়া পশুদের খাঁচার বাইরে দত্তক গ্রহণকারীদের নামের বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এদিন কলকাতার সৌর্য্য দেবের বাবা স্বর্ণব দেব ও মা সঞ্চারী ভট্টাচার্য্য দেব জানিয়েছেন, ছেলের জীব বৈচিত্রের প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলতে এবং আমাদের বেচেঁ থাকতে হলে আমাদের চারপাশের প্রাণী জগৎ কে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব কর্তব্যের জন্য বন্যপ্রাণী দত্তক নেওয়ার ভাবনা।
তারা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই সৌর্য্য পাখির বই দেখতে খুব ভালোবাসে। কিছুদিন আগে বর্ধমানের এই পার্কে ঘুরতে এসে ছেলের পছন্দের এমু পাখিকেই দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আজ সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল। অন্যদিকে দত্তকগ্রহণকারী অর্ণব দাস ও রোশনি দাস ভট্টাচার্য্য এদিন জানিয়েছেন, তারা এর আগেও একাধিক পশু পাখি দত্তক নিয়েছেন। বর্ধমানের রমনা বাগান চিড়িয়াখানার কিছু প্রাণী কে দত্তক নিতে চেয়ে আগেই আবেদন জানিয়েছিলেন। এদিন সরকারি ভাবে এই কাজ শুরুর দিনেই পশুদের দত্তক নিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।