বিজ্ঞাপন
সৌরীশ দে,বর্ধমান: রাজ্যের মোট ১০৮টি পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কবে ভোট হবে সেব্যাপারে এখনো কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় কারা প্রার্থী হতে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এমনকি কেউ কেউ সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী তালিকা তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার বিভ্রান্তি আরো প্রকট হয়েছে। ৩৫টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট বর্ধমান পুরসভার নির্বাচনে এক একটি ওয়ার্ডের প্রার্থী হতে চেয়ে ইতিমধ্যেই তিন থেকে পাঁচ জন ব্যক্তি তাদের বায়োডাটা কলকাতায় দলের কাছে পাঠিয়েছেন বলে দলেরই একাংশ সূত্রে শোনা যাচ্ছে। যদিও গত ১৫দিন ধরে বর্ধমান পুর এলাকায় দলীয় নির্দেশেই তৃণমূলের আইটি সেল এব্যাপারে সমীক্ষা চালাচ্ছে বলে পুরসভারই একাধিক প্রাক্তন কাউন্সিলার জানিয়েছেন।
বুধবার বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে উপস্থিত হয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, যে বা যারা দলীয় অনুশাসন ভেঙে সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করছেন তাদের কেউ যদি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনরূপ বিভ্রান্তি ছড়ানো বরদাস্ত করা হবে না। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন ঘোষণা এখনো হয়নি। পুরসভার কোন ওয়ার্ডে কে প্রার্থী মনোনীত হবেন তাও ঠিক করবে রাজ্য নেতৃত্ব। সুতরাং এই নিয়ে বিভ্রান্তির কোন জায়গা নেই।
এদিকে বর্ধমান শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরূপ দাস জানিয়েছেন, যবেই ভোট হোক আর যেই প্রার্থী হোক, দলের সমস্ত নেতা,কর্মী প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে জেতাতেই দলগত ভাবেই কাজ করবে। তবে তিনি জানিয়েছেন, যদি দলের কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে দল তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে, বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক তথা প্রাক্তন কাউন্সিলার খোকন দাস জানিয়েছেন, এসব বিরোধীদের চক্রান্ত, পৌরসভা ভোট নিয়ে এখনো কোনো নির্দেশ আসে নি। কোনো প্রার্থী বাছাইও হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের। সুতরাং যারা এসব ভুলভাল তথ্য ছড়াচ্ছেন তারা দলের কেউ নয়, বরং দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে দল দলীয়ভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে আসন্ন সম্ভাব্য পুর নির্বাচনে এবার বেশ কিছু নতুন মুখের প্রার্থী হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলের একাংশের আলোচনায় উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রে যেমন রাজ্যের এক মন্ত্রীর স্ত্রীয়ের নাম উঠে আসছে তেমনি বর্ধমান শহরের এক প্রভাবশালী প্রমোটারের পরিবারের সদস্যের নামও আলোচনায় আসছে। এমনকি পুরসভার এক প্রাক্তন কাউন্সিলারের স্ত্রী এবং পুত্রও এবার পুরনির্বাচনে টিকিট পেতে পারেন বলে কানাঘুষো শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম দিয়ে কিছু চমক দেখাতে চাইছে, তারা আসলে ওয়ার্ড অনুযায়ী প্রার্থী সংরক্ষণের বিষয়ে কিছুই জানে না।
কারণ, দেখা গেছে যে ওয়ার্ড টি মহিলা সংরক্ষিত সেখানেও পুরুষ প্রার্থীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, তৃণমূল দলে শৃঙ্খলা রয়েছে। যেকোনো নির্বাচনের জন্য প্রার্থী তালিকা তৈরি করে রাজ্য নেতৃত্ব। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনাও করে। তবে, নিজেদের মনগড়া যেসব প্রার্থী তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর যারা চেষ্টা করছে তারা অন্তত তৃণমূলের কেউ নয়। দল ইতিমধ্যেই কালপ্রিটদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।