---Advertisement---

শিকার পরব ঘিরে বন্যপ্রাণী শিকার আদিবাসীদের, বিক্ষোভে ঘেরাও বনদপ্তরের আধিকারিকরা

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: আদিবাসীদের শিকার উৎসব পালন কে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটল পূর্ব বর্ধমানের বেলকাস পঞ্চায়েতের ডিভিসি ক্যানেল পাড়ের জোড়াবাঁধ এলাকায়। সোমবার ছিল বাঁধনা পরব। আর সেই উপলক্ষে আদিবাসী সমাজের মানুষ তির ধনুক সহ শিকার করার নানান অস্ত্র নিয়ে দামোদর তীরবর্তী এলাকায় বন্যপ্রাণী শিকারে বেরিয়েছিলেন। ভাম বিড়াল, গোসাপ সহ বেশ কিছু বন্যপ্রাণী কে তারা এদিন শিকার করেন।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু সূত্র মারফৎ সেই খবর পৌঁছে যায় বন দপ্তরে। বন দপ্তরের রেঞ্জ অফিসারের নেতৃত্বে অন্যান্য আধিকারিক ও কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আদিবাসীদের শিকার করা মৃত প্রাণীগুলোকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেন। বন কর্মীদের আসতেই অনেকে ছুটে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। আর এরপরই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। প্রায় জনা পঞ্চাশ জন মিলে রীতিমত তীরধনুক নিয়ে বন দপ্তরের কর্মীদের ঘেরাও করে রেখে দেয়। বন দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের কাছ থেকে শিকার করা প্রাণীদের তাদের কে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি জানাতে থাকেন তারা।

আদিবাসি যুবক লক্ষ্মীনারায়ণ হেমব্রম বলেন, ‘আমাদের পরব চলছে। বছরে এই একদিনই আমরা শিকার করতে বের হই। এটা আমাদের ধর্মের রীতির মধ্যে পড়ে। আমরা গো-সাপ আর কটাশ মেরেছি। সেগুলো বনদপ্তরের লোকেরা নিয়ে চলে যাচ্ছে। তাই আমরা ওদের গাড়ি আটকে রেখেছি।’ আরও এক যুবক বিমল হেমব্রম বলেন, ‘আমাদের পরম্পরার মধ্যেই পড়ে এই শিকার করা। আমারা শিকার করে বাড়ি ফেরার সময়ে বন দপ্তরের লোকেরা ধরেছে। আমাদের শিকার করা প্রাণী আমাদের ফেরত দিতে হবে, সেই দাবিতেই আমরা ওদের ঘিরে রেখেছি।’

বন দপ্তরের কর্মীরা বিক্ষুদ্ধ আদিবাসীদের প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করেন বন্যপ্রাণী হত্যা আইনবিরুদ্ধ কাজ, সুতরাং তারা পশু শিকার করে অপরাধ করেছেন। কিন্তু নাছোড় আদিবাসীরা সেইসব কথা বুঝতে চায়নি বলে অভিযোগ। আদিবাসীরা বন দপ্তরের গাড়িও আটকে দেয়। পরে নবাবহাট এলাকার তালপুকুর এলাকা থেকে কয়েকশো আদিবাসি মহিলা ও পুরুষ চলে আসে জোড়াবাঁধ এলাকায়। বন দপ্তরের আধিকারিকরা খবর দেন বর্ধমান থানায়। বর্ধমান থানা থেকে আই সি সুখময় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দীর্ঘসময় ধরে বাঁধে দাঁড়িয়েই আদিবাসিদের সঙ্গে চলে আলোচনা। বন্যপ্রাণ হত্যার বিভিন্ন নিময়ের বিষয়টিও তাদের বোঝানো হয়। শেষ অবধি পুলিশি হস্তক্ষেপে বনকর্মীদের ছেড়ে দেন আদিবাসিরা।

See also  এখন বর্ধমানেই পোষ্যবান্ধব হোম-স্টের সুযোগ, উৎসাহী পর্যটকরা

বর্ধমান বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার কাজল বিশ্বাস বলেন, ‘ কারণ যাই থাকুক বন্যপ্রাণী হত্যা আইনত দণ্ডনীয়। আমাদের কর্মীরা সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার জন্য একটি আহত গোসাপ কে অন্তত বাঁচাতে পারা গেছে। গো-সাপটিকে চিকিৎসার পরে ফের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে। আমরা আদিবাসিদের গ্রামে সচেতনার প্রচারেও যাবার সিধান্ত নিয়েছি। পরবের নামে বন্যপ্রাণ হত্যা বন্ধ করতে সবাইকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি আমরাও। বন্যপ্রাণ বাঁচাতে না পারা গেলে আগামীদিনে আমাদেরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---