ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরের বিসি রোডের ওপর চাপ কমাতে শহরে ভারী যানবাহন ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করাই ছিল। এবার দ্রুত তা কার্যকর করার পথে হাঁটল জেলা প্রশাসন। উল্লেখ্য, দীর্ঘকাল ধরে বর্ধমান শহরের বিসি রোডের পাশে চলে আসছে তেঁতুলতলা বাজার এবং রাণীগঞ্জ বাজার। এই সমস্ত বাজারে পাইকারী ও খুচরো দুরকম পদ্ধতিই চালু রয়েছে। আর তার ফলেই রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জিটি রোড এবং বিসিরোডে বিভিন্ন ধরণের আনাজ, মাছ প্রভৃতি নিয়ে ব়ড় বড় গাড়ির আসা যাওয়া লেগেই থাকে। এরফলে একদিকে যানজট, অন্যদিকে নোংরা আবর্জনায় ছড়াচ্ছে দূষণ। এই সমস্ত কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই এই পাইকারী বাজারকে এখান থেকে তুলে শহরের বাইরে কোনো একটি জায়গায় নিয়ে যাবার জন্য পরিকল্পনা করছিল প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
বছর খানেক আগে এই দুই বাজারের পাইকারী সবজী, ফলমূল এবং মাছ, ডিমের বাজারকে সরিয়ে কালনা রোডের এগ্রিকালচার ফার্মে কৃষক বাজারে নিয়ে যাবার প্রস্তাব নেওয়া হয়। প্রস্তাব মেনে কৃষক বাজারে সবপক্ষকে নিয়ে বৈঠকও হয়। কিন্তু পরিকাঠামোগত অসুবিধার কথা তুলে ধরে ব্যবসায়ীরা সেখানে যেতে আপত্তি জানান। একইসঙ্গে তাঁরা জানান, যদি ২নং জাতীয় সড়কের ধারে সরকার কোনো জায়গা দিতে পারে তাহলে তাঁরা সেখানে যেতে প্রস্তুত। এরপর বেশ কিছুদিন গোটা বিষয়টি থেমে যায়। সম্প্রতি শহরের যানজট সমস্যা বাড়তে থাকায় ফের এই বিষয়টিকে নিয়ে নড়াচাড়া শুরু হয়।
এরই মাঝে বর্ধমান উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান হিসাবে তৃতীয়বার মনোনীত হবার পরই প্রাক্তন বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন শহরের পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী রাণীগঞ্জ বাজার এবং তেঁতুলতলা বাজারকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিডিএ। আর এরই মাঝে বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের পৌরোহিত্যে শহরের ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা, বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস সহ পূর্ব বর্ধমান জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির আধিকারিক সহ অন্যান্যরা।
এদিন বিধায়ক নিশীথ মালিক জানিয়েছেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাঁর বিধানসভা এলাকা তথা বৈকুণ্ঠপুর ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের হাটশিমূল এলাকায় সরকারীভাবে প্রায় ৩০ বিঘে জমি রয়েছে। সেখানেই এই বাজারকে স্থানান্তরিত করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে আগামী ২৭ আগষ্ট ওই জায়গাতেই একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তারপরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, এদিন বর্ধমানের চেম্বার অব ট্রেডার্সের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে পাইকারি বাজার স্থানান্তরকরণের বিষয়ে এবং নতুন প্রস্তাবিত জায়গায় তাঁদের পরিকাঠামোগত সুবিধা দেবার কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকের আগেই এই বিষয় নিয়ে তাঁরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন। তারপরই ২৭ তারিখের বৈঠকে তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদিও তিনি জানিয়েছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই এই প্রস্তাবের সমর্থন করেছে। বাকি অনিচ্ছুকদের সমগ্র বিষয়টি জানিয়ে শহরের উন্নয়নের স্বার্থে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।