ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: চারজন অনাথ শিশু কে নিয়ে বসিরহাটের খোলাপোতা থেকে চরচাকা গাড়িতে বর্ধমানের হাইমাদ্রাসায় আসছিলেন মোশারফ মন্ডল। মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান থানার লাকুর্ডি মোড়ের কাছে তার গাড়িটিকে পিছন থেকে একটি দশ চাকার লরি সজোরে ধাক্কা মারে। লরিটির সামনে চারচাকা গাড়িটি আটকে গিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার হিঁচড়ে চলে যায়। আশপাশের লোকেদের চিৎকারেও থামেনি লরিটি। পরে কোনভাবে লরিটি দাঁড়িয়ে পড়লে লরি ছেড়ে পালিয়ে যায় চালক। গাড়ির ভিতরে থাকা চারজন শিশু সহ মোশারফ মন্ডল সকলেই কমবেশী আহত হন এই দুর্ঘটনায়। বরাত জোরে সবাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্থ গাড়িটিকে লরির মুখ থেকে ক্রেণ দিয়ে বের করে উদ্ধার করে। আটক করা হয় লরিটিকে। মোশারফ মন্ডল বলেন, ‘আমি একেবারে নিয়ম মেনেই বাম দিকে আসছিলাম। লরিটা পিছন থেকে এসে ধাক্কা মেরে প্রায় তিন কিলোমিটার ছেঁচড়ে নিয়ে আসে। রাস্তার লোকেরা চিৎকার করে লরিটি কে থামতে বললেও থামেনি। আমিও চিৎকার করে লরিটি কে থামাবার চেষ্টা করলেও শোনেনি চালক। কিভাবে আমরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছি বুঝতে পারছিনা এখনও।’
বর্ধমান হাই মাদ্রাসার এক শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনার খবর পেয়েই হাসপাতালে এসেছিলাম। ওখানে সবার চিকিৎসার পরে এখন ছেড়ে দিয়েছে। দুজন বাচ্চার মাথায় আঘাত লেগেছে। আমরা সবাইকেই মাদ্রাসায় নিয়ে যাচ্ছি। ওখানে থেকেই ওদের পরের চিকিৎসা করাবো।’ এদিকে জাতীয় সড়কে লরির বেপরোয়া গতির পাশাপাশি চালকের বদলে খালাসির হাতে থাকা স্টিয়ারিং কিংবা চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই এভাবেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয় মানুষ দের অনেকে জানিয়েছেন। ঘাতক লরির রেজিস্ট্রেশন নম্বর খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ভাতার থানার নাসিকগ্রামে দুটি মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হলো এক বাইক আরোহীর। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে ভাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতের নাম চিরন মালিক। তার বাড়ি মেমারি থানার পাল্লারোডে। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় লোকেরই আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাইক দুটি উদ্ধার করে। আহতদের ভাতার থেকে বর্ধমান পাঠানোর ব্যবস্থা করে। নাসিগ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত ধারা বলেন, ‘দুটো বাইকেই ২ জন করে ছিল। নাসিগ্রামের মোড়ের কাছে মুখোমুখি দুটো বাইকের সংঘর্ষ হয়। কারুর মাথাতেই হেলমেট ছিলনা। একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকি তিনজনকে এলাকার লোকেরাই উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।’