এবার নৌকাই ভরসা! গত কয়েকদিনের অবিশ্রাম বৃষ্টিতে শেষমেষ জলের তোড়ে ভেঙ্গেই গেল সেতু, বিচ্ছিন্ন বর্ধমানের দুটি ব্লকের প্রায় ২০টি গ্রাম

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর অজয় নদে জল বাড়ায় এবার মন্তেশ্বর ব্লকের শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে বর্ধমান ১নং ব্লকের যোগাযোগাকারী খড়ি নদীর উপর একমাত্র সেতু শেষমেষ ভেঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। এই ঘটনায় বর্ধমান ১নং ব্লক এর সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ২০টি গ্রাম। উল্লেখ্য এই সেতু প্রতিবছরই বর্ষার সময় কার্যত জলের তলায় চলে যাওয়ায় দুটি ব্লক বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।  বিগত বেশ কয়েকবছর ধরেই প্রশাসনের কাছে এই সেতু পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন দুই ব্লকের বাসিন্দারা। তবু বছরের পর বছর কেটে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। শেষমেষ গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির জেরে খড়ি নদীর জলে সেতু ডুবে থাকার পর জল কিছুটা নামতেই ভাঙা সেতুর কাঠামো বেরিয়ে আসে। সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় নদী পারাপার।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের কাছে দুই ব্লকের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দ্রুত দুটি নৌকার ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন করেছেন বৃহস্পতিবার।দুপুরে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, গ্রামগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য আপাতত এই নৌকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অপরদিকে, এই ব্রীজ জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ায় গ্রামের বাসিন্দারা দুষেছেন জেলা প্রশাসনকেই।

 গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক দশক ধরে এই কাঠের ব্রীজকে পাকা ব্রীজ করার জন্য তাঁরা আবেদন করেই আসছেন। কেউ শোনেনি তাঁদের কথা। শুধু তাইই নয়, জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকরা কেবলই প্রতিশ্রুতিই দিয়ে গেছেন। কিন্তু আজও হয়নি পাকা সেতু। এমনকি মাস খানেক আগেই জুন মাসের ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছিল এই ব্রীজ। তখনও টনক নড়েনি জেলা প্রশাসনের। আর এবার একেবারেই ব্রীজকে ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে জলস্রোত। এদিকে, এই ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় ১০ কিমি ঘুরে মালম্বা রাস্তা দিয়ে যেতে হচ্ছে। 

অন্যদিকে, করোনার জেরে এখনও স্বাভাবিক হয়নি বাস চলাচল। ফলে চরম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন রাজগাছি, মামুদপুর, খেড়ুর, কুবাজপুর, বাড়ুই, পানবড়ুই, মাধবপুর প্রভৃতি প্রায় ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদ থেকে এই ব্রীজ তৈরীর জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রায় ২৫ ফুটের ব্রীজ তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যতক্ষণ না ব্রীজ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আর তাঁরা কারোর উপরই ভরসা রাখতে পারছেন না।

আরো পড়ুন