ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: একেই বলে ‘যে থালায় খায়, সেই থালাই ফুঁটো করা।’ দীর্ঘদিন যে বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে আসছিল, পরিবারের অসহায়তার সুযোগে সেই বাড়ির আলমারি থেকেই নগদ ত্রিশ হাজার টাকা ও ১৪গ্রাম সোনার গহনা চুরি করে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছিল রিতা ঘাটোয়াল ওরফে রিম্পা ঘাটোয়াল ওরফে কালো নামে এক মহিলা। ভেবেছিল কেউ কিছু জানতে পারবে না। কিন্তু অবশেষে পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে চুরির তদন্তে নেমে প্রায় দু মাস পর চুরির কিনারা করল বর্ধমান থানার পুলিশ। শক্তিগড় থানার বসতপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা রিতা ঘাটোয়াল কে তার বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পরিচারিকা রিতা ঘাটোয়াল কে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি যে স্বর্ণকারের কাছে সোনার গহনা বিক্রি করেছিল ধৃত, তারও সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে চুরি যাওয়া নগদ উদ্ধারের জন্য ধৃত মহিলা কে বর্ধমান আদালতে পেশ করে সাতদিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে বৈকুন্ঠপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়নগর গ্রামের বাসিন্দা পায়েল চট্টোপাধ্যায় পুলিশের কাছে ১৭ সেপ্টেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বাবা দীপক চট্টোপাধ্যায়ের আচমকা মৃত্যুতে সে ও তার মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি দেখতে পান দোতলার ঘরের আলমারির ভিতরে রাখা ত্রিশ হাজার টাকা ও সোনার গহনা নেই। গোটা বাড়ি খুঁজেও তিনি কোন হদিশ করতে পারেননি। দীর্ঘদিনের পরিচারিকা রিতা কে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিতা উল্টে বাড়ির লোকেদের মেজাজ দেখায়। এমনকি সে বলে, তাকে কেন সন্দেহ করা হচ্ছে। এরপর পরের দিন থেকেই রিতা কাজে আসা বন্ধ করে দেয়। পায়েল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘গোটা বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজেও চুরি যাওয়া জিনিস না পেয়ে বাধ্য হয়েই থানায় অভিযোগ জানাই আমরা। পুলিশ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে। সোনার গহনার সন্ধান পেয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে এখনও হাতে পায়নি। পুলিশকে ধন্যবাদ।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা রোডের একটি সোনার দোকানে সোনার গহনা বিক্রী করে দেয় অপরাধী মহিলা। যদিও সোনার দোকানের মালিক দীপক কর্মকার বলেন, ‘আমাকে ১৪ গ্রামের সোনা দিয়ে ওই মেয়েটি নতুন গহনা তৈরী করার জন্য বলে যায়। তারপরেই আমি সোনার গহনা গলিয়ে ফেলি। পরে পুলিশ ওই মেয়েটিকে নিয়ে এলে আমি গলানো সোনা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। আমি কোন গহনা কিনিনি ওই মেয়েটির কাছ থেকে।’ ডিএসপি রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ প্রাথমিকভাবে তদন্তে নেমে রিম্পাকেই সন্দেহ করেছিল। তার বাড়িতে গিয়ে বেশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরে সে চুরির কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো সোনার দোকান থেকে গলিয়ে ফেলা সোনাও উদ্ধার হয়েছে। হেফাজতে নিয়ে বাকি জিনিস উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশ পেলেই উদ্ধার হওয়া গলানো সোনা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে অভিযোগকারীকে।