ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, কাটোয়া: ব্যাংক থেকে পেনশনের ৩৫হাজার টাকা তুলে সবজি বাজার করতে গিয়ে ভুলে সবজির দোকানেই টাকা সমেত ব্যাগ ফেলে বাড়ি চলে এসেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার ন্যাশনাল পাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ হেমচন্দ্র রেজ। বাজার করে বাড়ি ফিরে তাঁর খেয়াল হয় টাকার ব্যাগ, যাতে তাঁর দুটো এটিএম কার্ডও ছিল, সব সমেত ব্যাগটি তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। দিশেহারা হেমচন্দ্র বাবু এরপর উদভ্রান্তের মতো ছুটে যান পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য। গোটা ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে তিনি লিখিত দরখাস্ত জমা করেন কাটোয়া থানায়। পুলিশ বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। শুরু করে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দরখাস্তকারির কাছে ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশ স্থানীয় রুদ্র মার্কেটের ভিতর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। আর সেখানেই পুলিশ হারিয়ে যাওয়া ব্যাগের হদিস পেয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পরিষ্কার দেখা গেছে অভিযোগকারী বৃদ্ধ বাজার করার সময় তাঁর ব্যাগ সবজি দোকানের একটি ঝুড়িতে রেখে বাজার করছিলেন। বাজার করা হয়েগেলে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
এরপর সবজি বিক্রেতা সেই ব্যাগটি তার পাশের এক ফল বিক্রেতার কাছে দিয়ে দেয়। পুলিশ এরপর ওই দুই সবজি ও ফল বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। সেখানে তারা একটি ব্যাগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তারা আরো স্বীকার করেন, ওই ব্যাগটিতে টাকা ও এটিএম কার্ড রাখা ছিল। কিন্তু সেই ব্যাগ কার, ও কখন, কিভাবে সবজির ঝুড়িতে পড়েছিল তাদের জানা ছিলনা। এরপর পুলিশের উদ্যোগেই অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ হেমচন্দ্র রেজের হাতে টাকা সহ ব্যাগটি ফেরত দিয়ে দেন ওই দুই ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, হেমচন্দ্র বাবু তাঁর টাকা সহ ব্যাগ ফেরত পেয়ে যেমন ধরে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন, পাশাপাশি কাটোয়া পুলিশের কর্ম দক্ষতার ভুয়সী প্রশংসা করছেন। কিন্তু কাটোয়াবাসীদের অনেকেই এই ঘটনার সমাধানে পুলিশ কে কৃতিত্ব দেওয়ার পাশাপাশি আসল হিরো বানিয়েছেন সিসি ক্যামেরার কেরামতিকেই। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না পেলে ব্যাগ গায়েব হয়ে যাওয়ার রহস্য ভেদ করতে পুলিশ কে যে রীতিমত বেগ পেতে হতো সেই ব্যাপারে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে কাটোয়া পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহরের যেকোন ধরনের ক্রাইমই হোক কিংবা পুলিশ কে হস্তক্ষেপ করতে হয়, এই ধরনের ঘটনার সমস্যার সমাধান যাতে দ্রুত করা যায় তার জন্যই গোটা শহরে প্রায় হাজারের বেশি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। তার মধ্যে ১৬টি নাইট ভিশন ক্যামেরাও রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানাই দেশের মধ্যে প্রথম থানা যেখানে ১হাজারের ওপর ক্যামেরা আইনশৃংখলা রক্ষার জন্য লাগানো রয়েছে। জানা গেছে, একমাত্র মুম্বাই পুলিশ কমিশনারেটে দেড় হাজার ক্যামেরা আছে। কলকাতা পুলিশের আছে আটশো ক্যামেরা, কিন্তু সেগুলো সমস্ত থানার এরিয়া মিলিয়ে। কিন্তু কাটোয়া থানা এলাকাতেই শুধু রয়েছে ১০০৮টি সিসি ক্যামেরা। যেটা দেশের মধ্যে নজিরবিহীন।