ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যজুড়ে অবৈধ নির্মান, পুকুর ভরাট, রাস্তা ও ফুটপাত জবরদখলের বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন। ভর্ৎসনাও করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলির আধিকারিক দের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পুরসভার প্রধান থেকে মন্ত্রী আমলাদের। আর এরপরই গোটা রাজ্য জুড়ে রীতিমত নড়েচড়ে বসেছে পুরসভা গুলির প্রশাসন। বাদ যায়নি বর্ধমান পুরসভাও।
কয়েকদিন আগেই বর্ধমান শহরের একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার শহরে অবৈধ নির্মাণ, পুকুর ভরাট ও জবর দখলের পিছনে খোদ শাসক দলের প্রভাবশালীদের মদত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। আর সেই বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। যা নিয়ে কার্যত হৈ চৈ পড়ার পাশাপাশি দলের মধ্যে তুমুল অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। আর এবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকারের সেই বক্তব্যের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, সেই সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ও প্রমাণ পেশ করার জন্য চিঠি পাঠিয়ে জানাতে বলেছেন চেয়ারম্যান কে। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই তুমুল আলোড়ন তৈরি হয়েছে বর্ধমান জুড়ে।
যদিও পরেশ চন্দ্র সরকার এই চিঠি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘ মাননীয় রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী আমাদের দলের জেলা সভাপতি। ওনার অধিকার আছে দলের কোন কর্মীর কাজের বিষয়ে জানার। উনি আমার কাছেও কিছু জানতে চেয়েছেন। এটা আমার কর্তব্য তাঁকে সবটাই জানানোর। আমি সব কিছুই জানাবো। এর মধ্যে দ্বিমত কিছু নেই। তবে আমি কোনো সাংবাদিক বৈঠক করে কোন কথা বলিনি। বাকি যা কিছু বলার আমি আমার দলের সভাপতিকে বলবো। সময় হলে আপনারাও জানতে পারবেন।’ চিঠির বয়ান নিচে দেওয়া হলো –
শ্রী রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী সভাপতি, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস
মহাশয়, বর্ধমান শহরে অবৈধ নির্মান, পুকুর ভরাট ও জবরদখলের বিষয়ে আপনি সাংবাদিক বৈঠকে যে কথা বলেছেন তা আজকের (২৮জুন ২০২৪) আনন্দবাজার পত্রকিায় প্রকাশিত হয়েছে যা আমার নজরে আসে। সংবাদ পত্র থেকে জানতে পারলাম আপনি বলেছেন শাসক দলের প্রভাবশালীদের মদত ছাড়া অবৈধ নির্মান, পুকুর ভরাট ও জবর দখল হয় না।
আপনাকে প্রথমেই অবহিত করি আপনার এই সাংবাদিক বৈঠককে দল বৈধতা দেয় না। এবং দল আপনার কাছে জানতে চায় এই ধরনের সাংবাদিক বৈঠক করার পূর্বে আপনি দলের কোন উচ্চ নেতৃত্বের কাছে অনুমতি নিয়েছিলেন কি না?
এছাড়াও দলের পক্ষ থেকে আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনি সাংবাদিকদের কাছে যে সমস্ত প্রভাবশালীদের কথা বলেছেন যাঁরা বর্ধমান শহরে অবৈধ নির্মান, পুকুর ভরাট ও জবর দখলের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমান দলের কাছে দাখলি করুন। দল তথ্য প্রমান দেখে এবং তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
ধন্যবাদান্তে, রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী সভাপতি, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস।