ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মঙ্গলকোট: বাড়িতে ঢুকে প্রাক্তন ছাত্রী তথা একসময়ের প্রেয়সী যুবতীকে চাকু দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল ৩৮ বছর বয়সী এক মাঝবয়সী শিক্ষক যুবকের বিরুদ্ধে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে যুবতী কে। অভিযুক্ত যুবকও রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার গোহগ্রাম গ্রামে। দুই পরিবারের পক্ষ থেকেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মঙ্গলকোট ও কৈচর ফাঁড়িতে।
আক্রান্ত যুবতীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের গোহগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা মিরাজ আলি চৌধুরীর মেয়ে নাজমা খাতুন কে ক্লাস ফাইভ থেকে সেভেন তিন বছর গৃহ শিক্ষক হিসেবে পড়িয়েছিলো ফিরোজ খান। তখন থেকেই নাজমাকে ভালোবাসতো ফিরোজ। নাজমার পরিবারে বারবার তার বিয়ের সম্বন্ধ করলেও নাজমার পরিবার থেকে তা অস্বীকার করে দেওয়া হতো। এরই মধ্যে কয়েক বছর পর নাজমা গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে ফেলে। সে বাড়িতেই থাকছিল। পরিবার থেকে বছর তিনের ধরে নাজমার বিয়ের জন্য পাত্রের খোঁজ চালাচ্ছিল বিভিন্ন জায়গায়। পরিবারের অভিযোগ, সেই সম্বন্ধগুলো সব ভাঙিয়ে দিচ্ছিল ফিরোজ। পরিবারের আরো অভিযোগ, প্রায়শই বাড়িতে এসে ফিরোজ হুমকি দিয়ে যেত নাজমার সঙ্গেই তার বিয়ে দিতে হবে বলে।
এরই মধ্যে চলতি বছরের জুন মাসে ভাতার থানার কালিটিকুড়ি গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিবাহ হয় নাজমার। তারপর থেকেই আরো অত্যাচার চালাতে শুরু করে ফিরোজ বলে নাজমার পরিবারের লোকদের অভিযোগ। এরপর মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে দুই পক্ষকে ডেকে পাঠানো হবে বলে জানানো হলেও নাকি ডাকা হয়নি। এমনই দাবি নাজমার পরিবারের। এদিকে সোমবার ভোর বেলায় নাজমা বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে নাজমাকে ব্যাপক হারে কোপাতে শুরু করে ফিরোজ। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয় আশঙ্কাজনক অবস্থায়।
নাজমার পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ফিরোজ খানের দাবি, দীর্ঘ দশ বছর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে নাজমাকে সে বলে তার দেওয়া যে সমস্ত জিনিস আছে নাজমার কাছে আছে সেগুলো ফেরত দিতে হবে। এরপর সোমবার সকাল ছটা নাগাদ ফিরোজ নাজমার বাড়িতে গেলে ফিরোজকে মারধর করে নাজমার পরিবারের লোকজন। ফিরোজের পরিবারের আরো অভিযোগ, নাজমা কে তড়িঘড়ি হাসপাতালে আনা হলেও ফিরোজ কে রক্তাক্ত অবস্থায় নাজমার বাড়িতেই ফেলে রেখে দেওয়া হয়। পরে ফিরোজের পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নাজমার স্বামী জানান, ফিরোজের পরিবার গ্রামেতে এতটাই প্রভাবশালী ওদের বিরুদ্ধে গ্রামের লোক এমনকি প্রশাসনের কেউ কথা বলতে চায় না। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। এদিকে মঙ্গলকোটের গোহগ্রামে এলোপাথাড়ি ভাবে ছুরি চালানোর ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ব্লক জুড়ে।