ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: হাইকোর্টের আদেশে ভোটের ফলাফল পরবর্তী হিংসার কারণে ঘর ছাড়া বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর কাজ চলছে গত প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে। শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ, বর্ধমান দক্ষিণ, মেমারী এবং মাধবডিহির ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ফেরাতে এলেন হাইকোর্টের বিজেপির লিগ্যাল সেলের আইনজীবী প্রিয়াংকা টিব্রেয়াল এবং বিজেপির রাজ্য কোষাধ্যক্ষ ড. সায়র ধনননিয়া। এদিন বিজেপির জেলা অফিসে থাকা বিজেপির খণ্ডঘোষ এলাকার প্রায় ৩৮জনকে তাঁরা বাড়ি ফিরিয়ে দিলেন। একইসঙ্গে বাকি থানা এলাকার ঘরছাড়াদেরও তাঁরা এদিন বাড়ি ফিরিয়ে দেন।
বিজ্ঞাপন
এদিন প্রিয়াংকা টিব্রেয়াল জানিয়েছেন, ভোটের ফলাফলে একটি দল জিতেছে। তাই বলে অন্য দলের ওপর অত্যাচার হবে কেন? এটা গণতন্ত্র নয়। এব্যাপারে তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ঘরছাড়াদের সম্পূর্ণভাবে পুলিশী নিরাপত্তায় বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাড়ি ফেরানোর পরও যদি বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ওপর কোনোরকম অত্যাচার হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট সেই থানার ওসি, আইসি, জেলা পুলিশ সুপার প্রমুখদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে তাঁরা এফআইআর দায়ের করবেন।
যদিও তিনি জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি অন্যান্য জেলায় যাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা এখনও পর্যন্ত কেউই আক্রান্ত হয়নি। তাঁরা বিশ্বাস রাখছেন পুলিশ যথাযথ কাজ করবেন। এদিন বিজেপির জেলা কমিটির সহ সভাপতি প্রবাল রায় জানিয়েছেন, ২ মে-র পর থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলায় খণ্ডঘোষ, রায়না, বর্ধমান উত্তর, বর্ধমান দক্ষিণ, মেমারী, জামালপুর, মাধবডিহি, গলসী, আউশগ্রাম সহ একাধিক থানা এলাকায় বিজেপি কর্মীদের ওপর তৃণমূল সন্ত্রাস চালিয়ে তাদের ঘরছাড়া করে দিয়েছে। জায়গায় জায়গায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। বাড়ি ঘরে লুঠপাট চালানো হয়েছে। এব্যাপারে তাঁরা থানাওয়ারি ঘরছাড়াদের তালিকা তৈরী করে রাজ্য দপ্তরেও পাঠিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, শতাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থকদের জেলা পার্টি অফিসে আশ্রয়ও দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এদিন প্রিয়াংকা টিব্রেয়ালের নেতৃত্বে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে বাকি থানা এলাকার ঘরছাড়াদেরও বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। এদিকে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, সবটাই বিজেপি নাটক করছে। হাইকোর্টের নির্দেশ আসার অনেক আগেই অর্থাৎ তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সমস্ত স্তরের নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনো হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। এমনকি পুলিশ প্রশাসনকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যদি হিংসার সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
আর এতদিনে বিজেপি নেতারা নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ সামাল দিতে না পেরে নিজেদের দোষ ঢাকতে অত্যাচারের গল্প ফাঁদছে। তিনি বলেন, আজ যারা ঘর ছাড়া তারা ভোটের আগে নিজের নিজের এলাকায় কি কি বলেছিল, কি কি হুমকি দিয়েছিল সেইসব গুলো আগে ভাল করে খোঁজ নিক। আর তার জন্যই ভোটের ফল ঘোষণার পর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে এলাকাছাড়া হয়ে গিয়েছিল। এতে তৃণমূলের কোনো অত্যাচার ছিলোনা বা নেই। ওরা যা বলছে সব মিথ্যা। কারণ গোটা রাজ্যের সাথে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার, আউসগ্রাম, বর্ধমান দক্ষিণ, রায়না, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান উত্তর সহ অন্যান্য বিধানসভা এলাকায় ইতিমধ্যে বহু বিজেপির ঘরছাড়া কর্মীদের তৃণমূলের বিধায়ক থেকে নেতা নেত্রীরা তাদের নিজের ঘরে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন নতুন করে বিজেপি যা বলছে সব নাটক।