---Advertisement---

নদনদী থেকে বর্ষাকালীন বালি উত্তোলন বন্ধের সময়সীমা আদৌ কি বাড়বে! চিন্তায় ঘাট মালিক থেকে শ্রমিকরা

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বাংলায় বর্ষা এসে গেল। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর আগমন ঘটেছে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। ফলে ফের চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে বালি ঘাট মালিকদের কপালে। অন্যান্য বছর মোটামুটি ১৫ জুনের পর থেকেই সরকারিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় নদী থেকে বালি তোলার কাজ। যদিও গতবছর টানা লকডাউনের জন্য বালি ব্যবসায়ীরা বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় এবং সরকারি রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বর্ষাকালীন নদী থেকে বালি তোলার নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা দিয়েছিল প্রশাসন। 

বিজ্ঞাপন

পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতবছর এই শিথিলতা বাড়ানো হয়েছিল ১০জুলাই পর্যন্ত। তবে এবছর এখনো পর্যন্ত বৃষ্টি সেই ভাবে শুরু হয়নি। নদ-নদীতেও জল নেই। এরই মধ্যে গত ১৬মে থেকে রাজ্যে আংশিক লকডাউন চলছে। দ্বিতীয় দফায় তা বাড়িয়ে ১৫জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে নদী থেকে বালি তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশপাশি বন্ধ রয়েছে পরিবহন ব্যবস্থাও। ফলে ১৫জুন বিধিনিষেধ উঠলেও বালির বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন কি সিদ্ধান্ত নেয় তার দিকেই তাকিয়ে আছেন জেলার বালি ঘাট ব্যবসায়ীরা। 

বর্ধমান জেলার বালি ব্যবসায়ী যোগেন বর্মণ জানিয়েছেন, গত বছর টানা লকডাউনে প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল বালি ব্যবসায়। চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন
হয়েছিলেন এই ব্যবসার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত শ্রমিক,কর্মীরা। বর্ষাকালীন বালি উত্তোলনের নিষেধ ওঠার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই এবছরের মে মাস থেকে ফের করোনার বারবারন্তের কারণে সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে ঘাট মালিক থেকে শ্রমিকদের। তিনি জানিয়েছেন, এবছর কি হবে এখনো জানা নেই। তবে পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে তাহলে প্রশাসনের কাছে নদী থেকে বালি তোলার সময়সীমা কিছুদিন বাড়ানোর আবেদন জানানো হতে পারে। 

অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক ঋদ্ধি ব্যানার্জি বলেন, বর্ষাকালীন নদনদী থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামী ১৫জুন পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে বিধিনিষেধ লাগু রয়েছে। তার আগেই এই বিষয় নিয়ে প্রশাসনিক আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তারপরই বর্ষাকালীন বালি উত্তোলন বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে নাকি এই সময়সীমা বাড়ানো হবে – তা জানানো যাবে।

উল্লেখ্য গত বছর টানা লকডাউনের পর পূর্ব বর্ধমান জেলার বালিঘাট গুলোকে খোলার অনুমতি দিলেও বর্ষায় নদ-নদীর জল বাড়তে শুরু করে দেওয়ায় ঘোর বিপাকে পড়ে বালি কারবারিরা। খোদ বালিঘাট মালিকদের একাংশ জানিয়েছিলেন, যে পরিমান বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই আর ঘাট চালানো সম্ভব হবে না। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির পরিমান বাড়লে স্বাভাবিকভাবে ডিভিসি কে জল ছাড়তে হবে। সেক্ষেত্রে নদীর জলস্তর তিন থেকে চার ফুট বেড়ে যাবে। আর তখন কোনোভাবেই নদী থেকে বালি উত্তোলন করা যাবে না। 

অন্যদিকে, বালিঘাট মালিকরা জানিয়েছিলেন, গত বছর ২২মার্চ থেকে দেশ জুড়ে লোকডাউন জারি করা হয়। জুন মাসের ৮তারিখ থেকে লোকডাউন কিছুটা শিথিল করে আনলক পর্ব চালু হয়। অর্থাৎ বালি তোলার জন্য বছরের আসল সময়েই করোনা পরিস্থিতির জন্য লকডাউন শুরু হওয়ায় তাঁরা ভয়ংকর ক্ষতির মুখে পড়েন। এরপর শেষমেষ বালি তোলার অনুমতি পেলেও নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষা ঢুকে পড়ায় ফের ঘোর সমস্যায় পড়লেন তাঁরা। যদিও তাঁরা জানিয়েছিলেন, বর্ষার সময় বেশিরভাগ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে, তাই এই সময় বালির চাহিদাও কম থাকে। এই সময় মজুদ বালি সরবরাহ করেই ব্যবসা সচল রাখতে হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবছর ইতিমধ্যেই বালি মজুদ করার বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে।

See also  ফোকাস বেঙ্গলের খবরের জের - ২৪ঘন্টার মধ্যেই ভ্যাকসিন দেওয়া হল মেমারীর খর্বকায় দুই ভাইকে
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---