বর্ধমান শহরের অভিজাত এলাকা খোসবাগান পার্ক এখন সমাজবিরোধীদের আখড়া, নির্বিকার প্রশাসন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরের 

বিজ্ঞাপন
হৃদপিন্ড খোসবাগান এলাকার শ্যামসায়রের পাড়ে অবস্থিত বিনোদন পার্ক এখন কার্যত দুষ্কৃতিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে ক্রমশই আতংক বাড়ছে এলাকার মানুষদের। বিশেষত, বর্ধমান শহরের এই খোসবাগান এলাকা যা ডাক্তার পাড়া হিসাবেই চিহ্নিত। রয়েছে অভিজাত পরিবারের বসবাস। তাই অত্যন্ত ঘিঞ্জি এই এলাকার মানুষদের একটু স্বস্তি দিতে বাম আমলে শ্যামসায়রের পাড়ে হরিসভা স্কুল আর রামকৃষ্ণ আশ্রম লাগোয়া জলাশয়ের ধারে এই পার্ক তৈরি করা হয়েছিল। সকাল বিকালে বয়স্কদের বেড়ানো, শিশুদের কোলাহলে মুক্ত বাতাসে রীতিমত জমজমাট হয়ে থাকত এই পার্ক। পরবর্তীকালে ২০১৮ সাল নাগাদ খোসবাগান তথা পুরসভার ৩০নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা অজিত খাঁ এই পার্কের সৌন্দর্য্যায়ন করে দেন। 
তৈরী করা হয় শিশুদের দোলনা, করা হয় বসার জায়গা থেকে পারলৌকিক কাজের জন্য ঘাট। রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় শ্যামসায়রের পাড়। কিন্তু গত দুবছর ধরে এই পার্ক ধীরে ধীরে অসামাজিক লোকেদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিককালে বিশেষত ভোটের মুখে পুরোপুরি অরক্ষিত হয়ে পড়ে এই পার্ক। দুপাশের পার্কের গেট এখন সব সময়ই খোলা থাকে। আর তারই সুযোগ নিয়ে দিনে দুপুরেও অসামাজিক কার্যকলাপের মূল আখড়া হয়ে পড়েছে এই পার্ক। চলছে দেদার মদ্যপান থেকে গাঁজা, হেরোইনের কারবার। অভিযোগ শুধু সন্ধ্যের পরই নয়, দিনের বেলায়ও এই জায়গায় কেউ আসতেও ভয় পায়। 
উল্লেখ্য, প্রায় দুবছর বর্ধমান পুরসভায় কোনো বোর্ড নেই। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে প্রশাসক নিয়ে কাজ। ফলে আগ বাড়িয়ে কেউই এব্যাপারে এগিয়ে যেতে চাইছেন না। কারণ এই অসামাজিক কার্যকলাপ রোধ করতে গেলে রাজনৈতিক বিদ্বেষ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি প্রতিবাদ করলে দুস্কৃতিদের হামলার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে সবমিলিয়ে কার্যত হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন তৃণমূলের নেতারাও। যদিও এব্যাপারে ৩০নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তথা সমাজসেবী অজিত খাঁ জানিয়েছেন, তাঁর কাছেও খবর এসেছে এই পার্কের অসামাজিক কাজ নিয়ে। বর্তমানে তিনি মেডিকেল কলেজ মাঠের সৌন্দর্যায়ন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। চলতি জুন মাসের শেষে তাঁর পরিকল্পনা রয়েছে এই পার্ককে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ নেবার। 
তিনি জানিয়েছেন, তিনি এই পার্ককে সাজিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ফের নোংরা, আবর্জনা, জঙ্গলে পূর্ণ হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এই পার্ক কে ফের সকলের ভ্রমণের জন্য করে দেবার উদ্যোগ নেবেন। অন্যদিকে, পুরসভার সম্পত্তি এই পার্কের অসামাজিক কাজ নিয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন বর্ধমান পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত গুহ। তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলেই তিনি দ্রুত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

আরো পড়ুন