ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ফের তৃতীয়বারের জন্য বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হল রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে। কার্যত বাম আমলে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের পর এবারই প্রথা ভেঙে কোনো জনপ্রতিনিধিকে চেয়ারম্যান পদে বসানো হল না। এতাবতকাল বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের পর বিশেষত বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়করাই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেতেন। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা ভোটে রবিরঞ্জনবাবু শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন খোকন দাস। স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই ভেবেছিলেন পদাধিকার বলে খোকন দাসই পরবর্তী বিডিএ-র চেয়ারম্যান হবেন।
বিজ্ঞাপন
এমনকি চেয়ারম্যান পদে আলোচনা শুরু হয়েছিল বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকের নাম নিয়েও। কারণ বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের পাশাপাশি বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রের প্রায় ১০ শতাংশ এলাকা বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের এক্তিয়ারভুক্ত রয়েছে। যদিও সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবারই নতুন নোটিফিকেশন জারী করা হয়। আর রবিরঞ্জনবাবুকেই তৃতীয়বারের জন্য বিডিএ-এর চেয়ারম্যান হিসাবে বসানো হয়। বুধবারই তিনি তৃতীয়বারের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। আর দায়িত্ব গ্রহণ করেই দীপ্তকণ্ঠে রবিরঞ্জনবাবু এদিন জানিয়ে দিলেন বর্ধমান শহরের মধ্যে দিয়ে ক্রিশক্রশ প্রথায় বাস চালানো হবে না।
উল্লেখ্য, বর্ধমান শহরের মধ্যে দিয়ে ক্রিশক্রশ প্রথায় বাস চালানোর জন্য এবারও নির্বাচনের আগে দাবী তোলে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলি। এমনকি ভোটে তাঁদের প্রভাব রয়েছে বলে হুমকি দিয়ে পাল্টা প্রার্থী দেবারও ঘোষণা করে তাঁরা। এদিন রবিরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, তিনি যখন দাঁড়িয়েছিলেন তখনও ব্যবসায়ীরা এই দাবী তুলেছিল। তবুও তিনি ৩০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ শহরের মধ্যে দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাই আর কোনোভাবেই শহরের মধ্য দিয়ে ক্রিশক্রশ প্রথায় বাস চালানো হবে না।
এদিন তৃতীয়বারের জন্য চেয়ারম্যান পদে বসার পর রবিরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, বিডিএ বর্ধমান পুরসভা সহ আশপাশের আরও কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে। ফলে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি চেষ্টা করবেন সেই কাজ করতে। তিনি জানিয়েছেন, অনেকদিন ধরেই তিনি চেষ্টা করছিলেন বর্ধমানে আরও একটি শ্মশান তৈরীর। এদিনই রাজ্য সরকারের আরবান দপ্তরের পক্ষ থেকে সেই শ্মশান তৈরির অনুমোদনের চিঠি তিনি পেয়েছেন। বর্ধমান শহরের ১৬নং ওয়ার্ডে দামোদরের ধারে নতুন আধুনিক একটি শ্মশান তৈরী করা হবে। তারজন্য প্রকল্প তৈরী করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান শহরে নতুনগঞ্জ, বড়বাজার এবং তেঁতুলতলা বাজার অনেক পুরনো বাজার। এখানকার পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর, ঘিঞ্জি। এই তিনটি বাজারকে আধুনিক করা হবে। আমিষ, আলু-পিঁয়াজ ছাড়াও প্রতিদিন কাঁচা সব্জীর জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে থাকার ব্যবস্থা, শৌচাগারের ব্যবস্থাও। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ফের তাঁকে বর্ধমানবাসীদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তিনি তা করার চেষ্টা করবেন। ইতিপূর্বে গত ১০বছরে বিডিএ বর্ধমানে প্রচুর কাজ করেছে। অন্যদিকে, রবিরঞ্জনবাবুকে চেয়ারম্যান করায় খুশী বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। তিনি জানিয়েছেন, রবিবাবুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ায় আরও উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে।