ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান থানার অন্তর্গত বেলকাশ এলাকার দামোদর নদ থেকে রাতের অন্ধকারে বেপরোয়া ভাবে চলছে বালি চুরি। এলাকায় বসবাসকারী অনেকেই সরাসরি অভিযোগ করে জানিয়েছেন, কিছু বালি মাফিয়া রীতিমত নদীর বাঁধের নিচ থেকেই প্রচুর পরিমাণে বালি কেটে পাচার করে দেওয়ার ফলে নদীবাঁধ ধ্বসে পড়ছে। এরফলে অদূরেই বিপন্ন হতে পারে এলাকার বহু কৃষিজমি। তৈরি হতে পারে বন্যার আশঙ্কা। তাদের আরো অভিযোগ, প্রতিদিন রাত আড়াইটে তিনটে থেকে ভোর পাঁচটার মধ্যে নদী থেকে এই বালি চুরি চালাচ্ছে মাফিয়ারা।
বেলাকাশ পঞ্চানন হাই স্কুলের উল্টোদিকে গাজন তলা মন্দিরে সামনে দিয়ে বাঁধের রাস্তায় উঠে বর্ধমানের উদয়পল্লি, কাঞ্চননগর, রথতলা হয়ে সেই সমস্ত বালির ট্রাক্টর পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এই এলাকায় নজরদারিতে থাকা বর্ধমান থানার পুলিশের একাংশের সঙ্গে সেটিং করে এই বালি চুরির কারবার চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কিছু বালি মাফিয়া। দিনের পর দিন শহরের রাস্তা নষ্ট করে বালির ট্রাক্টর চললেও এই বেআইনি কারবার বন্ধে নাকি কোন হুঁশ নেই পুলিশের! অন্যদিকে ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের নাকি এই এলাকায় দেখাই পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন এলাকার স্থানীয় অনেকেই।
অভিযোগ, স্থানীয় জোড়াবাঁধ এলাকায় মাঝে মধ্যে বর্ধমান থানা থেকে দুজন সিভিক ভলেন্টিয়ার কে রাতে নজরদারির জন্য রাখা হচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তারাও আর সেখানে থাকেনা বলে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন। এমনকি উদয়পল্লি থেকে রথতলা পর্যন্ত রাস্তাতেও বেশিরভাগ দিন কোন পুলিশি টহলদারি গাড়ির দেখা পাওয়া যায়না বলেও অভিযোগ। ফলে গভীর রাতে খোদ বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের বাড়ির সামনে দিয়েই শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক্টর চোরাই বালি নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ এইসমস্ত ট্রাক্টরের না আছে বৈধ কাগজ কিংবা বালি পরিবহনের কোনো বৈধ অনুমতি। এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ, নদী থেকে বালি তুলে শহরের মধ্যে দিয়ে দ্রুত গতিতে এইসব বালির ট্রাক্টর যাতায়াতের ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
খোদ বিধায়ক খোকন দাস কে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ’ বহুবার আমি পুলিশ কে বলেছি। পুলিশ মাঝে মধ্যে রেইড করে। কিন্তু যখনই আসে কাউকে নাকি পাওয়া যায়না। তবে এলাকার ভাল রাস্তা দিয়ে এত বালির গাড়ি যাতায়াতের ফলে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ছে। এইসব বেআইনি কাজ বন্ধ হওয়া উচিত। এই বিষয়ে আমার তো কিছু করার নেই। পুলিশ কে জানিয়েছি, তারাই দেখবে।’