কারুর ইনস্যুরেন্স ফেল, কারুর পলিউশন বা ফিটনেস, বর্ধমানের রাস্তায় শ’য়ে শ’য়ে চলছে বালি বোঝাই ট্রাক্টর!

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: স্বল্প দূরত্বে ইট,  বালি, পাথর, সিমেন্ট প্রভৃতি পরিবহনে ট্রাক্টর  একটি বহুল প্রচলিত যান পূর্ব বর্ধমান জেলায়। কিন্তু যে পরিমাণ ট্রাক্টর বর্ধমানের রাস্তায় বিভিন্ন খনিজ ও নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাতায়াত করে প্রতিদিন, এই সমস্ত ট্রাক্টরের আদৌ কোন সঠিক কাগজপত্র আছে কিনা তা নিয়ে ইতমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে বিভিন্ন মহল থেকে। এমনকি ইট, বালি, পাথর নিয়ে শহর ও শহর সংলগ্ন একাধিক জনবহুল রাস্তা দিয়ে এইসমস্ত ট্রাক্টর যে গতিতে যাতায়াত করে এর ফলে যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শহরবাসী অনেকেই।

বিজ্ঞাপন

সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ট্রাক্টরের নয় বৈধ কাগজপত্র নেই, অথবা দীর্ঘদিন গাড়ির ইনস্যুরেন্স ফেল হয়ে গেছে, অথবা পলিউশন ফেল, এমনকি ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে দাবি। এমনকি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন আচ্ছাদন ছাড়াই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই করে ট্র্যাক্টরগুলো চলাচল করছে বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বীমা বাবদ ক্ষতিপূরণ পাওয়াই মুশকিল এইধরনে ক্ষেত্রে বলে মত শহরবাসীর একাংশের।

আর এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সঠিক কাগজপত্র ছাড়া কিভাবে কয়েকশো ট্রাক্টর প্রতিদিন ইট, বালি, পাথর প্রভৃতি নিয়ে শহরের ট্র্যাফিক পয়েন্ট গুলো পেরিয়ে যাতায়াত করছে? ইদানিং চালান ছাড়া বালি বা অন্য কোন গৌণ খনিজ পরিবহন করা যাবে না বলে প্রশাসনিক নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। ফলে কিছুদিন আগেও যেখানে বেশিরভাগ ট্রাক্টরের কোন চালান থাকতো না, এখন সেই ছবি কিছুটা পাল্টেছে। অর্থাৎ নদী ঘাট থেকে ট্রাক্টরে বালি নিয়ে আসলে সেখান থেকে চালান ইস্যু করা হচ্ছে। ১০০ সিএফটি অর্থাৎ প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি বালি একটি ট্রাক্টর নিয়ে যেতে পারবে এই চালান ব্যবহার করে। বালি কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তারও উল্লেখ থাকে ই–চালানে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে গাড়ির কাগজপত্রেরই ঠিক নেই, সেই গাড়ি কিভাবে কেবলমাত্র বৈধ চালান ব্যবহার করে বালি বা অন্যান্য পণ্য পরিবহন করছে? তাহলে কি ট্রাক্টরের ক্ষেত্রে পরিবহন আইন আলাদা? শহরের তেলিপুকুর, উল্লাস মোড়, বীরহাটা, নবাবহাট, গোলাপবাগ মোড় ইত্যাদি জায়গায় ট্রাফিক পয়েন্ট রয়েছে। রয়েছে পুলিশি নজরদারি। অভিযোগ, তারপরেও প্রতিদিন কয়েকশো ট্রাক্টর এই সমস্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। বর্ধমান থানার পুলিশ বেআইনি ভাবে বালি পরিবহনের কারণে মাঝে মধ্যে কিছু ট্রাক্টর কে আটক করে। চালককেও গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।

কিন্তু গাড়ির বৈধ পেপার্স ছাড়াই শহরের মধ্যে দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করলেও সে ব্যাপারে পরিবহন দপ্তর বা ট্রাফিক পুলিশ কে সক্রিয় হতে দেখা যায় না বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। ফলে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোন বাণিজ্যিক ( commercial ) গাড়ি রাস্তায় চলতে পারে না। আর যে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেই, সেই গাড়ির বিষয়ে পরিবহন দপ্তরের কাছে কোন তথ্যও থাকে না। তবে এবিষয়ে পুলিশ এই ধরনের গাড়ি আটক করতেই পারে।

ছবি – ফাইল

আরো পড়ুন