ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, খন্ডঘোষ: পূর্ব বর্ধমানের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ধান চাষই হল মূল ভরকেন্দ্র। এই চাষকেই আরও লাভজনক ও বিজ্ঞানভিত্তিক করে তুলতে পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকার খণ্ডঘোষ থানার কৈয়ড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন বড় গোপীনাথপুর গ্রামে নজরকাড়া উদ্যোগ নিয়েছেন এক চাষি। প্রায় পঞ্চাশ বিঘার অধিক জমিতে তিনি সফলভাবে চাষ করছেন হাইব্রিড ধান, যা ‘পুরুষ ও স্ত্রী ধান’ নামে পরিচিত। এই উদ্যোগ নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের ধানচাষে, যা ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার দিশা দেখাতে পারে। পাশাপাশি আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও ঘটাতে পারে এই পদ্ধতি বলে মনে করছেন কৃষি বিজ্ঞানী থেকে ওয়াকিবহাল মহল।

এই ধানচাষে বিশেষ পদ্ধতিতে পুরুষ ও স্ত্রী ধান গাছের মধ্যে পরাগরেণুর সংকরায়নের মাধ্যমে হাইব্রিড ফসল উৎপন্ন হয়। জমিতে পুরুষ ধান থেকে স্ত্রী লাইনে দড়ি বা লাঠির মাধ্যমে নাড়াচাড়া করে ছড়ানো হয় পরাগরেণু। কৃষকদের মতে, এই পদ্ধতির জন্য প্রয়োজন উর্বর মাটি, পর্যাপ্ত সূর্যালোক, উন্নত সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের সঠিক নিয়ন্ত্রণ। কৃষি বিশেষজ্ঞ সুশান্ত চন্দ্র কর্মকার জানিয়েছেন, এই হাইব্রিড ধানচাষ এফ ওয়ান (ফাউন্ডেশন ফার্স্ট) এবং এফ টু (ফাউন্ডেশন সেকেন্ড) ধাপে হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে বীজ উৎপাদিত হয়, আর দ্বিতীয় ধাপে সেই ফসল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বড়ো গোপীনাথপুর গ্রামের ধান চাষি সন্দীপ মন্ডল নিজে জানান, “আমি বড় গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক। ৫০ বিঘা জমিতে পুরুষ ও স্ত্রী ধানের চাষ করেছি। প্রথমে পুরুষ ধান লাগানো হয়, তারপর মহিলা ধান। এরপর পুরুষ ধান কেটে দিই। মেশিন দিয়ে মহিলা ধান কাটা হয়। এইভাবে হাইব্রিড ধান তৈরী হয়। এতে বীজ উৎপাদন হয় এবং এই ধান ভবিষ্যতে ফুড হিসেবেও ব্যবহার হয়। আগেও করেছি, এবারও করছি। ভালো ফলনও পাচ্ছি। সরকার চাইলে আরও সহযোগিতা করলে আমরা আরও চাষ করতে পারি”।