ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: পুলিশের সঙ্গে চোর – পুলিশ খেলতে গিয়ে খোদ পুলিশের জালেই পর্দা ফাঁস হয়ে গেলো বালি চোরদের ! রীতিমত প্ল্যান তৈরি করে, সাধারণ পোশাকে, পুলিশের গাড়ি ছেড়ে পাবলিক গাড়িতে চেপে হানা দিতেই পুলিশের হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলো নদী থেকে চুরি করে নিয়ে আসা বালির ট্রাক্টর ও লরি। প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন ধরে গলসি থানার গোহগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দামোদর নদের একাধিক জায়গা থেকে বালি চুরির সাম্রাজ্য চালাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ ছিলো উত্তম মন্ডল নামে এক বালি মাফিয়ার বিরুদ্ধে। বারবার পুলিশ অভিযান চালালেও উত্তম মন্ডল সহ তার মাফিয়া গ্যাংয়ের লোকজন কে কব্জা করতে পারছিল না পুলিশ।
যদিও এর আগে খোদ বালি চুরির অভিযোগে উত্তম মন্ডলের একটি ট্রাক্টর কে বালি সহ বাজেয়াপ্ত করেছিল গলসি থানার পূর্বতন ওসি অরুন সোম। সেইসময় কয়েকদিন নদী থেকে বালি চুরি বন্ধ থাকলেও, ফের বেপরোয়া ভাবে চালু হয়ে যায় নদী থেকে বালি চুরির করে মজুদ করা ও সেই বালি রাতের অন্ধকারে পাচার করার কাজ। কিন্তু পুলিশের অভিযানে আগেই বালি মাফিয়াদের কাছে আগাম খবর পৌঁছে যেতে থাকায় পুলিশের পক্ষে ঘটনাস্থলে পৌঁছেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না। থানা থেকে শুরু করে বালি ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ‘লোকেশন পার্টির ‘ ছেলেরা পুলিশের গতিবিধি আগেই জানিয়ে দিচ্ছিল বালি চুরির সঙ্গে যুক্ত লোকেদের কাছে। আর এরপরই তড়িঘড়ি মাফিয়া গ্যাংয়ের লোকজন মেসিন থেকে শুরু করে খোদ বালি বোঝাই গাড়ি গুলোকে আড়ালে সরিয়ে দিচ্ছিল।
কিন্তু এবার এই বালি চোরদের জব্দ করার লক্ষ্যে রীতিমত ছক তৈরি করে মাঠে নামে পুলিশ। যাতে করে লোকেশন পার্টির কেউই পুলিশি অভিযানের খবর টেরই না পায়। ব্যাস, এরপরই বৃহস্পতিবার রীতিমত আঁটঘাট বেঁধে সিভিল ড্রেসে, অন্য সাধারণ একটি গাড়িতে খোদ গলসি থানার ওসি উত্তাল সামন্ত গোহগ্রামের নতুন বাইপাসের কাছে হানা দেয়। একটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর ও একটি লরি কে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে পুলিশ। এরইমধ্যে খোদ উত্তম মন্ডলের তিনটি ট্রাক্টর কোনক্রমে বালি ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় এবারের মতো পুলিশের নাগাল থেকে বেঁচে যায়। যদিও চালকরা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তার আগেই পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আটক ট্রাক্টর টিকে ( WB 42BB/4388) ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের হাতে এবং আটক লরি টিকে ( WB 53C/1515) মোটর ভেহিকেল ইন্সপেক্টর ( MVI ) এর জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আটক ট্রাক্টর ও লরির মালিকের খোঁজ চলছে। পাশাপাশি এই এলাকায় বালি চুরির সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চালানো হবে। এরপর নদী থেকে বালি চুরির বিরুদ্ধে আরো কঠিন পদক্ষেপ করা হবে।
