জেলা

অমরপুরে অস্থায়ী কাঠের সেতু বন্ধ, ভরা বর্ষায় দামোদরের বুকে নৌকায় ঝুঁকির পারাপার, পাকা সেতুর দাবি আজও অথৈ জলে

কুণাল চট্টোপাধ্যায়,জামালপুর: ডিভিসি জল ছাড়া শুরু করতেই জামালপুরের অমরপুর সহ প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। কারণ জামালপুরের সঙ্গে এই এলাকার যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম দামোদর নদের উপর কাঠের অস্থায়ী সেতুর পাটাতন খোলার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ফলে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ কে এবার ভরা দামোদরের এপার ওপার করতে ভরসা করতে হবে নৌকার। আর এখানেই তৈরি হয়েছে ঘোর আশঙ্কা।

 

নিত্য যাতায়াতকারী স্কুল পড়ুয়া থেকে অফিস, কাছারি, বাজার, চিকিৎসার প্রয়োজনে আসা বহু মানুষ সাফ জানিয়েছে, ভরা দামোদরে নৌকা করে পেরোনোর ঝুঁকি থেকেই যায়। কারণ এর আগে নৌকা উল্টে যাওয়া বা নৌকা থেকে মোটর সাইকেল পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ফলে ভরা বর্ষায় নদী পেরোতে নৌকায় যাতায়াত করা মানে নিজের জীবন হাতে নিয়ে যাওয়া। তাদের অনেকের আরো অভিযোগ, নৌকায় নদী পেরোনোর ক্ষেত্রে যাত্রী সুরক্ষার যে নূন্যতম ব্যবস্থা রাখার প্রয়োজন হয়, এখানে তার কিছুই রাখা হয় না। ফলে আশঙ্কা থেকেই যায়। 

স্বাভাবিকভাবেই নিত্যযাত্রীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বছরের পর বছর ধরে অমরপুরে দামোদরের উপর পাকা সেতু তৈরি করার সরকারি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজও কোন সরকার সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। ফলে বর্ষার মরশুমে প্রতিবছর প্রাণ হাতে করেই স্কুলের পড়ুয়া থেকে আম জনতাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই নৌকা করে দামোদর পেরোতে হচ্ছে। সারাবছর এই সেতু ব্যবহার করেন এলাকার প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। দু চাকা থেকে চার চাকা কিংবা ১০টন পণ্য বহনকারী যানও এই অস্থায়ী কাঠের সেতু পেরিয়ে এপার অপার করে অনায়াসে। কিন্তু শুক্রবার থেকে নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করায় এই সেতুর পাটাতন খুলে ফেলার কাজ শুরু করছে সেতুর টেন্ডার প্রাপক ব্যক্তিদের লোকজন।

প্রসঙ্গত নদের একদিকে রয়েছে অমরপুর, শিয়ালি, মাঠশিয়ালি, কোড়া সহ প্রায় ২৫টি গ্রাম। এই গ্রামের মানুষদের বাজার, স্কুল, কলেজ, চিকিৎসা বা যেকোন প্রশাসনিক কাজে আসতে হয় জামালপুরে। কাঠের এই সেতু পেরিয়েই তারা যাতায়াত করেন। জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে এই সেতু পরিচালনা করা হয়। সূত্রের খবর, টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে এই সেতু প্রতিবছর নির্মাণ করা হয়। আবার বর্ষার জল বাড়লেই সেতুর পাটাতন খুলে নেওয়া হয়।

যদিও নদীর নিচে পুঁতে রাখা শাল বল্ল গুলোকে খোলা হয় না। সেগুলো অনেক সময় জলের তোড়ে ভেসে যায়। কিছু থেকে যায়। অথচ বছরের পর বছর এলাকাবাসীদের কংক্রিটের সেতুর দাবি থাকলেও তা তৈরি হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই সরকারের এই উদাসীনতা নিয়েও এলাকাবাসীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি জানিয়েছেন, স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য বিধানসভায় তিনি প্রস্তাব রেখেছেন। পূর্ত দপ্তর গোটা বিষয়টি দেখছে। এই এলাকার মানুষদের যে দীর্ঘদিনের দাবি তা খুব দ্রুত পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।