ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, খন্ডঘোষ: অগ্নিকাণ্ডের জেরে ভষ্মিভূত গোয়াল ও বসতবাড়ি। বাড়ির আসবাবপত্র, পোশাক, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, নগদ কিছু টাকা সবই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডে অল্প বিস্তর আহত হয়েছে গোয়ালে থাকা গবাদি পশুরাও। কোন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বাড়ির সমস্ত কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় সর্বশ্রান্ত হয়েছে একটি পরিবার। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের বেরুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের দৈয়ড় গ্রামে। হঠাতই বাড়ির গোয়ালঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বাড়িতে। এবং সেই আগুনেই ভষ্মিভূত হয় বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র থেকে আরম্ভ করে পোষাক পরিচ্ছদ, প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও নগদ টাকা সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীও।
বাড়ির মালিক ও প্রতিবেশীদের প্রাথমিক অনুমান, ইলেকট্রিক শর্ট-সার্কিট থেকেই এই বিপত্তি। বাড়ির মালিক মোজাফফর হোসেন শেখ জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিটের জেরে গোয়াল ঘর থেকে আগুন সম্পূর্ণ বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে সম্পূর্ণ বাড়ি। সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির লোকজন বাইরে বেড়িয়ে যায়। গ্রামবাসীরা ছুটে এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। এলাকাবাসীদের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে সব পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এখন সর্বস্বান্ত ওই পরিবার কোথায় বসবাস করবে কিভাবেই বা আসবে তাদের দুবেলার দুমুঠো খাবার তা নিয়ে চিন্তিত গোটা পরিবার।
আগুনের গ্রাসে এই পরিবারের সঞ্চিত খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে মাথার ছাদ, পোশাক পরিচ্ছদ সবই ভষ্মিভূত হয়ে গেছে। প্রতিবেশী শেখ আসমত আলী জানান, অগ্নিকাণ্ডের জেরে সবই পুড়ে শেষ হয়ে গেছে সম্পূর্ণ মাটির কাঁচা বাড়িটির। আগুন নেভানোর জন্য স্বাভাবিকভাবেই অতিরিক্ত জল ব্যবহারের ফলে বাড়ির দেয়ালগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে, যেকোনো মুহূর্তে এই বাড়ি ভেঙে পড়ারও আশংকা রয়েছে । এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারকে প্রতিবেশীরা আশ্রয় দিয়েছেন। সরকারিভাবে যদি কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে ওই পরিবার আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারবে।
যদিও গ্রামবাসীরা জানান, রবিবার বিকাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত বা ব্লক থেকে কেউ এসে দাঁড়াননি ওই অসহায় পরিবারের পাশে। প্রতিবেশী শেখ আসমত আলী সহ এলাকাবাসীরা জানান, আগুন লাগার পর অগ্নি নির্বাপণ কেন্দ্রে খবর দেওয়া হলে দমকলের কর্মীরা হাজির হতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। কারণ এলাকায় কোন অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্র নেই। বর্ধমান অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্র থেকে আসতে হয় দমকলের কর্মীদের। তাই দক্ষিণ দামোদর এলাকায় একটি অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্রের অতি প্রয়োজন বলে দাবি তুলছেন এলাকার মানুষ। বেরুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পীযুষ সাহা বলেন, ‘আজ সোমবার দুয়ারে সরকার শিবির থাকার জন্য গতকাল ওই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারি নি। দুয়ারে সরকার শিবির হয়ে যাওয়ার পর অতি অবশ্যই পরিবারের পাশে দাঁড়াব। ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য কে নির্দেশ দিয়েছি পরিবারের পাশে থাকার জন্য।’