পশ্চিমবঙ্গ

বর্ধমান শহরে গৃহস্থের বাড়ি থেকে উদ্ধার বিরল বিষধর সাদা কেউটে, উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা!

FOCUS BENGAL

FOCUS BENGAL

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: চলতি শীতের কামড়ে মানুষ যেখানে কার্যত ঘরের বাইরে অকারণে বেরোনোর ইচ্ছা দেখাচ্ছে না, তখন সব হিসেব নিকেশ, তথ্য পাল্টে দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বর্ধমান বন দপ্তরের কর্মীরা শহরের তথা জেলার নানান প্রান্ত থেকে একের পর এক বিষধর সাপ উদ্ধার করে চলেছেন। প্রসঙ্গত সাপেরা এই সময়ে লম্বা শীত ঘুমেই থাকে বলে জানতেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু বন দপ্তরের গত কয়েকবছরের তথ্য বলছে সারা বছরের সঙ্গে শীতের সময়েও সমান তালে গৃহস্থের বাড়ি কিংবা রাইস মিল, কারখানা প্রভৃতি জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে উদ্ধার হচ্ছে বিষধর গোখরো, চন্দ্রবোড়া এমনকি কেউটেও।

বিজ্ঞাপন

শনিবার বর্ধমান শহরের বিজয়রাম হরিনারায়ণপুর কুঁড়েপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাকেশ দাসের বাড়ি থেকে বন দপ্তরের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা উদ্ধার করলো বিরল প্রজাতির সাদা কেউটে ( white monocled cobra)। আর এই ধরনের ভয়ংকর বিষধর কিন্তু বিরল সাপের হদিস পাওয়ায় বন দপ্তরের কর্মীরাও আশ্চর্য হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, মনোক্লেড কোবরা কিছুটা ও(O)-আকৃতির, বা মনোসেলেট হুড প্যাটার্ন এর হয়। এই প্রজাতির সাপেদের বয়স কম থাকার সময় বিভিন্ন রঙের হয়। এমনকি এদের জন্মের পরও একাধিক রংয়ের হয়। তবে বয়সের সাথে সাথে হালকা হয়ে যায়, সাধারণত সব সাদা। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কেউটে (Cobra) ৪.৫ থেকে ৭.৫ ফুট দৈর্ঘ্যে পৌঁছায়। তবে এর থেকেও অনেক বড় নমুনা রেকর্ড করা হয়েছে, কিন্তু তারা বিরল।

এদিকে বর্ধমান শহরের মধ্যে জনবসতি পূর্ণ এলাকায় কি ভাবে সাদা মনোক্লেড কোবরা প্রজাতির সাপ উদ্ধার হল, তাও আবার খোদ গৃহস্থের বাড়ি থেকে এই বিষয়টি রীতিমত ভাবাচ্ছে পরিবেশবিদ থেকে বন দপ্তরের আধিকারিকদের। পরিবেশবিদদের অনেকে জানাচ্ছেন, এমনিতেই মানুষ বন্যপ্রাণী থেকে শুরু করে পরিবেশে বসবাসকারী বিভিন্ন সরীসৃপ দের স্বাভাবিক বাসযোগ্য জায়গা গুলোতে দখলদারি চালাচ্ছে। ফলে নিশ্চিন্তে ওইসব প্রাণীরা নিজেদের স্বভাব অনুযায়ী থাকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। অন্যদিকে ইঁদুরের গর্তেই সাপেরা বাসা বাঁধে। এদিকে ইঁদুররাই কার্যত সুরক্ষিত নয়, আর তাই তারাও গৃহস্থের বাড়িতেই বাসা বাঁধছে। বাড়ছে ইঁদুরের উপদ্রব।

স্বাভাবিকভাবেই ঝোঁপ, জঙ্গল, বনবাঁদার ছেড়ে এইসব বিষধরেরা নিরুপায় হয়ে জনবসতির মধ্যে নিশ্চিন্তে থাকার জায়গা খুঁজতে চলে আসছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এরই মধ্যে যে বিষয়টি লক্ষ্য করার মতো সেটা হলো বন দপ্তরের লাগাতার প্রচার ও প্রয়াসে সাধারণ মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি বন্যপ্রাণ নিয়ে সচেতন, সতর্ক হয়েছেন। আর তার ফলেই এই সব প্রাণীরা লোকচক্ষুর সামনে আসলেই খবর পাচ্ছে বনদপ্তর। আর বনদপ্তর সর্বাঙ্গীন ভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতার দায়িত্ব পালন করে চলেছে।

Advertisement