ফুটবল জ্বরে কাঁপছে বিশ্ব, ক্ষুদেদের নিয়ে তৈরি ছবি বর্ধমান থেকে গেল ফিফায়

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ শুরু হতে বাকি আর মাত্র ৪ দিন ৷ কাতারে ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল ৷ গোটা বিশ্বজুড়ে ফুটবল প্রেমীরা ইতিমধ্যেই ফুটবল জ্বরে কাঁপছে। ভারত এই প্রতিযোগিতায় না খেলতে পারলেও কাতার বিশ্বকাপ কে সামনে রেখে তৈরি সল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘রোড টু কাতার’ এই বাংলা থেকে পৌঁছে গেলো ফিফার সদর দপ্তর জুরিখ সুইজারল্যান্ডে ৷ ছবির পরিচালক বর্ধমান শহরের বাসিন্দা কেকে মল্লিক। তার সহকারি এবং এই ছবির সম্পাদনা করেছেন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সৌভিক দাস ৷

বিজ্ঞাপন

দুর্গাপুরের কাছেই ছোট্ট গ্রাম কমলপুর। একঝাঁক খুদে ফুটবলার মেতে আছে ফুটবল নিয়ে। ওদের বয়স আট থেকে দশ বছরের মধ্যে। ফিফা কী, ওরা বোঝে না। বিশ্বকাপ আসলে কী, তাও জানে না। ওরা গাছের ডাল কেটে বানিয়েছে গোলপোস্ট, জোগাড় করেছে ছেঁড়া একটা বল। তাই নিয়েই মেতে আছে ফুটবলের আনন্দে। ফুটবলের প্রতি তাদের এই ভালবাসা কে সামনে রেখেই কেকে মল্লিকরা তৈরি করেছেন ‘রোড টু কাতার’। দুর্গাপুরের কমলপুরের আদিবাসী ক্ষুদে ফুটবলার দের স্বপ্ন একটাই ভালো ফুটবল খেলা।মাথার ওপর খোলা আকাশ, নিচে  জঙ্গলে ঘেরা লাল মাটির মাঠ। আর সেই রুক্ষ মাটিতেই ছোট ছোট পা গুলো দিয়ে বেরিয়ে আসছে ফুটবলের জাদু।

সৌভিক দাস বলেন,’তবে ফুটবল খেলার স্বপ্নটা এদের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছেন তাদের কোচ স্থানীয় সুকান্ত নাগ ও পাড়ার দাদা সঞ্জয় হেমব্রম ৷ আট থেকে দশ বছরের ক্ষুদে ফুটবলার অরুন, রবি, যতিন মার্শাল, ছোটু প্রত্যেকেই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের। এদের ফুটবল যাদু মন ভরাতে পারবে কলকাতা ময়দানের যে কোন প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার দেরও। পরিচালক কেকে মল্লিক বলেন,” হঠাৎই মাথায় আসে এই অচেনা অজানা ক্ষুদে ফুটলারদের নিয়ে কিছু একটা করার ৷ বরাবরের মতো সহকারি সৌভিক দাস ও সমরেন্দ্র দাসকে নিয়ে ছবি করতে ছুটে যাই দুর্গাপুরের কমলপুরের মাঠে৷ তৈরি করে ফেলি রোড টু কাতার ৷ ছবি পঠানো হয়েছে ফিফার সদর দপ্তরে। প্রাপ্তিস্বীকার করে ফিফার তরফ থেকেও এসেছে উত্তর। এই ছবির বিষয়বস্তু কে আরো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে কাতার ফুটবল এসোসিয়েশন  নিজেরাও আমাকে ফিফার সঙ্গে যোগাযোগ করার ফোন নম্বর দিয়ে সাহায্য করে প্রশংসিত করেছে ৷ 

কে কে মল্লিক বলেন,”ক্ষুদে খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি হওয়া এই ছবি দেখে খুশি হয়েছেন প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার ও মহামেডান স্পোটিং ক্লাবের সম্পাদক দিপেন্দু বিশ্বাস ৷ ফুটবল নিয়ে এর আগেও ছবি তৈরি করেছি। ইরানের ফুটবলার জামশিদ নাসিরিকে নিয়ে পার্শিয়ান ভাষায় ডকুমেন্টরি ফিল্ম ‘টেল অব নাসিরি’ বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে ৷ আর এবার ‘রোড টু কাতার’ ছবির মাধ্যমে বিশ্বফুটবল প্রেমিদের কাছে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার কথাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। দুর্গাপুরের অখ্যাত গ্রাম কমলপুরের লালমাটি থেকেও যে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটতে পারে, ক্ষুদে আদিবাসী ফুটবলাররা শত বাধা কে অতিক্রম করে একদিন বিশ্ব সেরা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে – ‘রোড টু  কাতার’ সেই গল্পই দেখিয়েছে।

আরো পড়ুন