ক্রাইম

মেমারির ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ষাট লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি, ২৪ঘণ্টার মধ্যেই ঝাড়খণ্ড থেকে উদ্ধার করল পুলিশ

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: ব্যবসার তাগাদা করতে যাওয়ার সময় রাস্তায় পথ আটকে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীদের দল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মাত্র ২৪ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে আনল মেমারি থানার পুলিশ। একই সাথে তিনজন অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যবসায়িক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তৎপরতায় ব্যবসায়ী উদ্ধারের ঘটনার প্রশংসা করেছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম বেণীমাধব ওরফে চন্দন চট্টোপাধ্যায়। তিনি একজন তামাক ব্যবসায়ী। তার বাড়ি মেমারী শহরের পুরোনো পোস্ট অফিস পাড়া এলাকায়।পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকাল ৪.৩০ টা নাগাদ মোটর সাইকেলে ব্যবসার  তাগাদার কাজে বেণীমাধব বাবু মেমারী থেকে ছিনুই-এর দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ঝাড়খণ্ডের নাম্বার প্লেট লাগানো একটি সাদা রঙের স্করপিও গাড়ি তার পথ আটকায়। ব্যবসায়ীকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে দ্রুত এলাকা থেকে বেরিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় মানুষজন বিষয়টি আঁচ পেয়ে প্রথমে ব্যবসায়ীর পরিবারকে খবর দেয়। পরিবারের পক্ষ থেকে এরপর অভিযোগ জানানো হয় মেমারি থানায়।

পুলিশ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে তদন্ত শুরু করে। এরই মধ্যে রাতে অপহরণকারীদের কাছ থেকে বেণীমাধব বাবুর পরিবারের কাছে ষাট লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে হুমকি ফোন আসে। তারা জানায়, ব্যবসায়ীকে ঝাড়খন্ডে পাকুরের কাছে আটকে রাখা হয়েছে। মুক্তিপণের টাকা না পেলে ব্যবসায়ীকে গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। পরিবারের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরই ফোনের সূত্র ধরে ও বিভিন্ন সূত্র মারফত তদন্ত শুরু করে মেমারি থানার পুলিশ। মেমারি পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন থানাকে এই ঘটনার বিষয় জানিয়ে সতর্ক করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এরপর মূর্শিদাবাদের সুতি চেকপোষ্টের কাছে অপহরণকারীদের গাড়িটির ছবি দেখা গেছে বলে জানতে পারে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তে মেমারী থানার পুলিশ জানতে পারে অপহৃত ব্যাক্তি বিড়ি পাতার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং সেই সূত্রে মুর্শিদাবাদের কয়েকজনের সাথে লেনদেনের পর ৯-১০ লাখ টাকা ধার হয়ে যায়। সেই টাকা আদায় করতে কিছু দুষ্কৃতী একটি স্করপিও গাড়ি করে তাকে অপহরণ করে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজের ওপর নির্ভর করে মেমারী থানা ও জেলা পুলিশের একটি দল ঝাড়খন্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাকুড় থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ। একইসাথে অপরাধে জড়িত তিন জনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃত অপরহনকারীদের নাম গোকুল ওরফে বকুল শেখ, আব্দুল আলিম ও সাহাবুদ্দিন শেখ। বকুলের বাড়ি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথপুর ধুলিয়ানার পশ্চিম পাড়া এলাকায়। বাকিদের বাড়ি ঝাড়খন্ডের পাকুর থানার মাকরাসোল এলাকায়। ধৃতদের মঙ্গলবার আদালতে তোলা হবে। অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটিকেও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সাতগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অনুপ দে।

Recent Posts