ক্রাইম

লক্ষাধিক টাকার প্রায় সাড়ে পাঁচ টন চোরাই রেলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার, বর্ধমান আরপিএফের জালে মহিলা সহ তিন কারবারি

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: নির্ভরযোগ্য সূত্রে খবরের ভিত্তিতে বর্ধমান স্টেশনের রেল সুরক্ষা বাহিনী ও বর্ধমান থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টা থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টে পর্যন্ত বর্ধমান শহরের পীরবাহারাম এলাকার একটি লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রির দোকান ও গোডাউনে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কেজি (৫.৫ টন) চোরাই রেলের সামগ্রী উদ্ধার করেছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। পাশাপাশি রেলের সামগ্রী চুরি করার এবং বিক্রি করার অপরাধে এক মহিলা সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে আরপিএফ। শুক্রবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

ধৃত ব্যক্তিরা হল শেখ রাজু ওরফে শেখ পিকু (৪৫), বাড়ি বর্ধমান শহরের গোলাহাট, বড় বালিডাঙ্গা। রোহিত হাজরা (২০), বাড়ি শহরের নতুনগঞ্জ এলাকার সাহাচেতন এলাকায়। এবং  রাশনি ভুইয়া (৩৪), বাড়ি বর্ধমানের গুডস শেড রোডের নেতাজি ক্লাবের কাছে। আইপিএফ আশীষ কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একটা গ্যাং রেল লাইনের ওপর ও ধার থেকে রেলের সামগ্রী চুরি করে পাচার করে দিচ্ছিল। আরপিএফ এই চক্র কে ধরার জন্য প্রক্রিয়া চালাচ্ছিল। এরই মধ্যে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল বর্ধমান শহরের পীরবাহরাম এলাকায় একটি লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রির দোকান ও গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। আর এরপরই বিপুল পরিমাণ চোরাই রেলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই চুরি চক্রের সঙ্গে যুক্ত এক মহিলা সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত আরো কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই বাকি দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

আরপিএফ পোস্ট বর্ধমান সূত্রে জানা গেছে, অভিযান চালানোর সময় অভিযুক্ত রোহিত হাজরা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অসফল হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে এই স্ক্র্যাপ বিক্রির দোকানের মালিকের নাম সেখ সমির। এই স্ক্র্যাপের ব্যবসা করে শেখ সমির ও তার ভাই শেখ আমীর। অভিযানের সময় দুজনই দোকানে উপস্থিত ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃত রোহিত পুলিশকে জানিয়েছে, শেখ সমীরের কাছে এসে ৬টাকা মাইনে কাজ করতো। তার কাজ ছিল গোডাউনের দেখাশোনা করার পাশাপাশি স্ক্র্যাপ সামগ্রী বিক্রির জন্য ব্যবহৃত যানবাহন বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। পুলিশ জানিয়েছে, রোহিত হাজরা কে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি দুই অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়া যায়। তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরপিএফ সূত্রে জানা গেছে, ট্রেন রেল লাইনের ওপর দিয়ে দ্রুত গতিতে পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রায়ই লাইনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে যায়। সেই সমস্ত যন্ত্রাংশ রেল লাইনের ওপর পড়ে থাকে। এছাড়াও রেলের কাজের জন্য বহু যন্ত্রাংশ লাইনের ধারে রাখা থাকে। এই দুষ্কৃতীদের গ্যাংয়ের লোকজন বিভিন্ন স্টেশন এলাকায় সক্রিয় এই সমস্ত যন্ত্রাংশ চুরি করে পাচার ও বিক্রি করে দিতে। এদিনের অভিযানে যে সমস্ত সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে যেমন প্লেট, ফিশ প্লেট, পেনড্রল ক্লিপ, এম লাইনার, প্লেট স্ক্রু, স্টপার,  ব্লক, হুক বোল্ট, ক্ল্যাম্প, বিয়ারিং প্লেট, হিল ক্রসিং, বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের রেল লাইন, মাস্টার কাটার প্রভৃতি।

Recent Posts