ক্রাইম

দামোদর নদের ইদিলপুর বালিঘাটে প্রশাসনিক অভিযান, আটক ট্রাক্টর

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: প্রশাসনের নজরদারির মধ্যেই নদী থেকে বালি চুরি করে পাচার করে দিচ্ছে বর্ধমান থানার অধীন ইদিলপুর এলাকার এক বালি ব্যবসায়ী। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বর্ধমান ১ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের নেতৃত্বে বর্ধমান থানার পুলিশ কে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হল দামোদর নদের ইদিলপুর শ্মশান ঘাট এলাকায়। চলতি বছরে বর্ষাকালীন নদী থেকে বালি উত্তোলনের প্রশাসনিক বিধিনিষেধ ওঠার পরই ইদিলপুর মৌজায় দেদার বালি চুরি করে পাচারের কাজ শুরু হওয়ার অভিযোগ ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।

আর এই বেআইনি কাজের পিছনে স্থানীয় এক বালি ব্যবসায়ীর (সাউ সাপ্লায়ার্স) নাম উঠে এসেছিল। অভিযোগ, ই-অকসনে কয়েক লাখ সিএফটি (CFT) স্টক বালি বিক্রির অনুমতি নিয়ে সেই চালান ব্যবহার করে দামোদর নদের ইদিলপুর মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নদীতে মেশিন নামিয়ে বালি কেটে ট্রাক্টর, ডাম্পার করে বালি পাচার করছে এই সাপ্লায়ার্স বলে অভিযোগ সামনে আসে। জানা গেছে, ইদিলপুর শ্মশান ঘাট এলাকায় নদীর নির্দিষ্ট একটি প্লটে বালি তোলার অনুমোদন রয়েছে ওই বালি কারবারির। কিন্তু অভিযোগ, অনুমোদিত অংশের বালি না কেটে নদীর প্রায় হাফ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে একাধিক মেশিন নদীতে নামিয়ে নৌকা করে বালি তুলে পাচার করে চলেছে এই এলাকার বালি কারবারিরা।

এমনকি প্রশাসনের বাজেয়াপ্ত করা মজুদ বালির স্টক থেকেও বালি চুরি করে পাচার করে দিচ্ছে স্থানীয় বালি মাফিয়ারা বলে অভিযোগ উঠে আসছে। আর মঙ্গলবার এইসমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বর্ধমান ১ব্লক ভূমি আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঘোষ বর্ধমান থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযানে চালান ছাড়া একটি ট্রাকটর কে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও বালি তোলার জন্য বৈধ কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। নদী থেকে বালি তোলার জন্য যে অনুমতি ছিল আগামীকাল অর্থাৎ ৬ডিসেম্বর সেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাকি সাউ সাপালায়ার্স এর নামে যে অন্য আরেকটি লিজের মেয়াদও আগামী ২২ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে আর ৫০হাজার সিএফটি বালি ঘাটমালিক নদী থেকে তুলে বিক্রি করতে পারবে।’

স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া এরপর আর নদী থেকে বালি তোলার কোন অধিকার থাকবে না এই কোম্পানির বলেই সূত্র মারফত খবর। এদিকে এরই মধ্যে ইদিলপুর হনুমান মন্দির সংলগ্ন এলাকায় নদীর বুকে একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হচ্ছে। অভিযোগ এই সেতুটির জন্যও কোন অনুমতিই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। অন্যদিকে এই এলাকায় নতুন করে একটি কোম্পানির বোর্ড লাগানো কে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যে কোম্পানির লিজ একদিন পর শেষ হয়ে যাবে, তারা কিভাবে অনুমোদনহীন জায়গায় ফের কোম্পানির বোর্ড লাগাচ্ছে তা নিয়েই এলাকায় কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, হনুমান মন্দির সংলগ্ন যে বালি ঘাটটি ছিল এক সময় সেটি মোহন চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির নামে নথিভুক্ত ছিল। বছর খানেক আগে সেই লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর নতুন করে এই ঘাটের কোন টেন্ডার হয়নি। তবু ওই এলাকা দিয়েই রাস্তা তৈরি করে বালির গাড়ি যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে বালি কারবারিরা। বালি তুলে সারাদিন কয়েকশ ট্রাকটর, ডাম্পার স্থানীয় আঞ্জিরবাগান ডিভিসি ক্যানেলের বিপজ্জনক ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে। অভিযোগ, বালি মাফিয়াদের ঔদ্ধত্যে স্থানীয় বসবাসকারী মানুষেরাও এইসবের প্রতিবাদ করতে পারছেন না। 

Recent Posts